ক্যান্সার প্রতিরোধে ননী ফল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:১৬ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার

ননী বলতে দুধের ননী নয়, একটি ফলের নাম হলো ননী। এ নামটি অনেকের কাছেই অপরিচিত। কারণ এটি একটি বিদেশি ফল। ননী ফল কেন খাবেন? বা এর উপকারিতা কী? সেসব সম্পর্কে জেনে নিন-
হাড়ের সমস্যা দূর করে ননী ফল। চিকিৎসকদের মতে, যারা হাড়ের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাদের জন্য এ ফল খুবই উপকারি। তারা যদি রোজ ননী ফলের জুস বা সরবত খেতে পারেন তবে খুব তাড়াতাড়ি ভালো ফল পাবেন। ব্যথা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন। তীব্র হাটুর যন্ত্রণায় যারা ভুগে থাকেন তারা ননী ফলের সরবত খেতে পারেন। আথ্রাইটিসের সমস্যায় ভোগা রোগীদের জন্যও ননী ফল খুবই উপকারি। এছাড়াও এ ফল ইউরিক এসিডের সমস্যাও দূর করতে পারে। যাদের ইউরিক এসিডের সমস্যা রয়েছে তাদের নানা রকম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। কিন্তু ইউরিক এসিডের রোগীরা খুব সহজেই ননী ফল খেতে পারেন।
ইউরিক এসিডের সমস্যা তখনই হয় যখন আমাদের শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। যার কারণে এ ধরণের সমস্যা হয়ে থাকে। এর ফলে হাঁটুতে প্রচন্ড ব্যথা হয়। এছাড়াও আরও নানা সমস্যায় পড়তে হয়। ননী ফল খেয়ে এসব বিরক্তিকর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কারণ ইউরিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে ননী ফল। এছাড়াও শক্তি বাড়াতে ননী ফলের জুড়ি নেই। অনেক সময় শক্তি কমে যায়, ক্লান্তি লাগে ও অবসাদ লাগে সেক্ষেত্রে ননী ফলের সরবত বা জুস খেতে পারেন। তবে অনায়েসেই শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। কারণ ননী ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিনস’। এটা যে শুধু শারীরিক ক্লান্তি দূর করে তাই নয়, মানসিক ক্লান্তিও অনায়েসেই দূর করে।
এমনকি ক্যান্সারের ওষুধ হিসেবেও ননী ফলকে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ সমস্যার ক্ষেত্রেও ওষুধের মতো কাজ করে ননী ফল। কারণ এতে রয়েছে ক্যান্সার ফাইটিং নিউট্রিয়েন্ট এবং টিউমার ফাইটিং উপাদান। বিশেষ করে, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এটি খুবই উপকারি। শুধু তাই নয়, দেহের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করতে সাহায্য করে ননী ফল। প্রতিদিন ননী ফলের রস খেতে পারলে বিভিন্ন রোগ থেকে অনায়েসেই দূরে থাকতে পারবেন। কারণ এতে থাকা অ্যান্টি ফাঙ্গাল, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরী উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। ননী ফল শরীরকে যেকোনো রকমের ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সক্রামণ আক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে। যার ফলে শরীর থাকে সুস্থ।
যখন খুব স্ট্রেসে থাকবেন তখন ননী ফলের জুস খেলে অনেক উপকার পাবেন। শরীরের অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধ করার সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রেস কমাতেও ননী ফল ভীষণভাবে সাহায্য করে থাকে। সেই সঙ্গে মানসিক ভারসম্যকেও উন্নত করে। মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। অর্থ্যাৎ শরীরের সঙ্গে মনকেও ভালো রাখে ননী ফল। ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশির সমস্যা কমাতেও ননী ফল ভীষণ ভালো কাজ করে। ননী ফলের সরবত খেলে ধীরে ধীরে এসব সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান। তাই সর্দি কাশি জ্বর থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে ননী ফল।
স্কাল্পের ইনফেকশন দূর করতে পারে ননী ফল। অনেক সময় মাথায় চুলকানি হয় বা বিভিন্ন রকম খোস পাঁচড়া হয়ে থাকে, এসব সমস্যা দূর করার জন্য ননী ফল খুবই উপকারি। ননী ফল মাথার খুশকির মতো সমস্যাও দূর করতে পারে। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ। এছাড়াও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ননী ফলের জুস খুবই উপকারি। ত্বককে গ্লোয়িং ও মশ্চারাইজ করে তোলে ননী ফল। ত্বককে স্বাস্থ্যবান করে তোলে ও আর্দ্র রাখে। যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের জন্য ননী ফল খুবই উপকারি। এছাড়া ত্বকের বার্ধক্য রোধ করতে পারে ননী ফল। ননী ফল ত্বকের ময়েশ্চারাইজ করার সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টি এজিং হিসেবেও কাজ করে থাকে। ননী ফলে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি ত্বককে টানটান ও সজীব রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাই ত্বকের বয়স ধরে রাখতে ননী ফলের ভূমিকা অনস্বীকার্য।