বৃহস্পতিবার   ২০ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

আইসিইউ থেকে কেবিনে আলাউদ্দিন আলী

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোববার

তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আইসিইউতে থাকা দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আলাউদ্দিন আলীকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী ফারজানা মিমি।

 

তিনি জানান, আলাউদ্দিন আলীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। চিকিৎসকদের কড়া নির্দেশ, কেবিনে যেন কোনো দর্শনার্থী ভিড় না করেন।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ফারজানা করিম জানান, উন্নতির হার এভাবে চলতে থাকে তিনি উঠে বসতে পারবেন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য আলাউদ্দীন আলীকে দেশের বাইরে নেয়ার ব্যাপারে ভাবা হবে।

আলাউদ্দীন আলীর মেয়ে আলিফ আলাউদ্দীন বলেন, ‘বাবা আস্তে আস্তে হাত নাড়াচ্ছেন। চোখ, মাথা ঘোরাচ্ছেন। ইশারায় তিনি আমাদের তার মনের কথা বোঝাতে পারছেন। বাবার আরও সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

বেশ কয়েক বছর ধরে রক্তচাপ ও ফুসফুসের সংক্রমণসহ একাধিক রোগে ভুগছেন আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী।

গত ২২ জানুয়ারি রাতে গুরুতর অসুস্থ হলে রাজধানীর মহাখালীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকা দেন প্রধানমন্ত্রী।

ও আমার বাংলা মা তোর, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাইসহ অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী। গীতিকবি হিসেবেও তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান লিখেছেন।

১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের এক সাংস্কৃতিক পরিবারে এ গুণী সঙ্গীতজ্ঞ জন্মগ্রহণ করেন।

আলাউদ্দীন আলী একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে সাতবার এবং গীতিকার হিসেবে তিনি একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

বাবা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছেই শৈশবে আলাউদ্দীন আলীর সঙ্গীতে হাতেখড়ি হয়। ১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং প্রখ্যাত সুরকার আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।

আলাউদ্দীন আলীর সুর করা আরও কয়েকটি বিখ্যাত গান হল- একবার যদি কেউ ভালোবাসত, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, হয় যদি বদনাম হোক আরও, আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার।

গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৯), সুন্দরী (১৯৮০), কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭৮-১৯৮০ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার পুরস্কৃত হয়ে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে রেকর্ড গড়েন, যা কেউ ভাঙতে পারেননি। এরকম আরও অনেক রেকর্ড রয়েছে আলাউদ্দীন আলীর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে।