‘গুল্লি বয়’-এর ব়্যাপে কতটা মজল দর্শক?
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:০৪ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোববার
পরিচালক যখন জোয়া আখতার, তখন দর্শকের চাহিদাও থাকে তুঙ্গে। যে পরিচালকের থেকে ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ বা ‘লাক বাই চান্স’-এর মতো ছবি অতীতে পাওয়া গিয়েছে, তার থেকে আরও ভাল ছবি তো আশা করা যেতেই পারে। এই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে বলা যায় অনুরাগীদের এবারও খুব একটা নিরাশ করেননি জোয়া।
সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার খবরে বলা হয়, মুম্বাইয়ের ধারাভিতে বস্তির এক ঘুপচি ঘরে থাকে মুরাদ। পড়াশোনায় সে অসাধারণ না হলেও নেহাত খারাপ নয়। তবে তার বান্ধবী সফিনা ডাক্তারি পড়ছে। মেয়ে হিসেবেও সে ভাল। কিন্তু ঠোঁটকাটা। বাংলায় যাকে বলে ধানি লঙ্কা। কেমিস্ট্রি তাদের ভালই। কিন্তু মুরাদের জীবনে দুটো সমস্যা। এক তার পরিবার, দ্বিতীয় স্বপ্ন। বাড়িতে তার বাবা মাকে ধরে পেটায়। অশান্তি তাদের তুঙ্গে। কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ সেদিন ভেঙে যায়, যেদিন বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আসে। না, মুরাদের জীবনের গতি এখান থেকে বদলায় না। বদলায় বাবার অ্যাক্সিডেন্টের পর থেকে।
পা ভেঙে যাওয়ায় বাবা বাড়িতে একপ্রকার শয্যাশায়ী। ফলে মুরাদকেই বাবার কাজ করতে হয়। কাজ বলতে গাড়ি চালানো। কিন্তু এতে তার স্বপ্ন গোল্লায় যেতে বসে। মনকে সে সান্ত্বনা দেয়। ‘আপনা টাইম আয়েগা’। ব়্যাপার হতে চায় মুরাদ। তবে ছোটখাট কোনও ব়্যাপার নয়। সে চায় গোটা বিশ্ব তাকে চিনুক। কিন্তু কীভাবে? ব়্যাপার হওয়া তো আর মুখের কথা নয়। কলেজে সে দেখেছে এম সি শেরের পারফর্মেন্স। ওইরকম হতে হবে তাকে। ফেসবুক ঘেঁটে সে সাক্ষাতের স্থানকালও জোগাড় করে ফেলে। মুরাদের জীবনের গতি ঘুরে যায়। শের তাকে শেখায় কীভাবে ব়্যাপ করতে হয়। এই দিনবদলের সময়েই মুরাদের সঙ্গে আলাপ হয় স্কাইয়ের। মিউজিক ভিডিও বানায় তারা। বদলে যেতে থাকে তার জীবন। মুরাদ থেকে নাম হয় ‘গুল্লি বয়’। অবশ্য এর পিছনেও একটা ছোট্ট ইতিহাস রয়েছে। সেটা না হয় সিনেমা দেখার জন্যই তোলা থাক।
মুরাদের গল্প আর পাঁচটা যুবকের স্ট্রাগল স্টোরি নয়। তার কারণ একটাই। ছবির প্রতিটি পরতে রয়েছে ব়্যাপের ছোঁয়া। যারা ব়্যাপ ভালবাসেন, তাদের এই ছবি অবশ্যই দেখতে হবে। আর ছবিটি দেখতে হবে রণবীর-আলিয়ার জন্য। রণবীরকে প্রতি পদক্ষেপে সঙ্গ দেওয়া ছাড়া আলিয়ার আর তেমন কোনও কাজ নেই। কিন্তু ওইটুকুতেই নিজের জাত চিনিয়েছেন অভিনেত্রী। রণবীরও অসাধারণ। চিত্রনাট্য চায়নি তাই। নাহলে রণবীর নিজেকে আরও মেলে ধরতে পারতেন। পরিচালক হিসেবে জোয়া আখতার সসম্মানে উৎরে গিয়েছেন। এই ছবি বক্স অফিসে কতটা উপরের দিকে উঠতে পারবে জানা নেই। কিন্তু হলফেরৎ দর্শকরা ফুল মার্কস দিচ্ছে ‘গুল্লি বয়’-কে।
