বৃহস্পতিবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আশ্বিন ৩ ১৪৩২   ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

নারীর স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় ভিটামিনসমূহ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোববার

পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এখন স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রসহ ঘরোয়া কাজে ব্যস্ত সময় পার করে থাকে। নারীরা প্রত্যেকেই এখন কম বেশি পরিশ্রমী। সংসার সামলানো, সন্তান লালন পালনসহ কর্মস্থানের কাজ সম্পাদন সবকিছুই সামলাতে হয় নারীদের। সে কারণে নারীদের উচিত তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা থাকা। সুস্থ থাকতে নারীদের শরীরে বেশ কিছু ভিটামিনের খুব প্রয়োজন। কারণ শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি হলে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। সেই ভিটামিনগুলো অবশ্যই তার শরীরে যথাযথভাবে থাকতে হবে। ভিটামিনগুলো কী? আবার শরীরে ভিটামিনের কোনো ঘাটতি হলে কী করতে হবে? কোন কোন খাবার থেকে বেশি পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যাবে? সেসব সম্পর্কে জেনে নিন-

 

‘ভিটামিন এ’ 
সকল বয়সী নারীদের জন্য ‘ভিটামিন এ’ খুবই জরুরি। ‘ভিটামিন এ’ দাঁত ও হাড় মজবুত রাখে। বেশিরভাগ নারীরাই হাড়ের সমস্যায় ভুগে থাকেন। হাঁটু ব্যথা ও কোমড় ব্যথা থেকে শুরু করে নানা রকম সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়াও দাঁত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। তাই ‘ভিটামিন এ’ যুক্ত খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। ‘ভিটামিন এ’ পেশী, টিস্যু ও ত্বক তিনটিকেই মজবুত রাখে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয় এবং বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি ধীর গতিতে হয়ে থাকে। অবশ্যই বয়স বৃদ্ধি হবে কিন্তু সেটা খুবই ধীরে ধীরে। তাই কোনোভাবেই শরীরে ‘ভিটামিন এ’ এর ঘাটতি হতে দেয়া যাবে না। টমেটো, পেঁপে, পেঁয়ারা, ব্রকলি, দুধ এ জাতীয় খাবারগুলো থেকে ভিটামিন এ পেতে পারেন। তাই প্রতিদিনই খাদ্য তালিকায় এসব খাবার রাখার চেষ্টা করতে হবে।

‘ভিটামিন ডি’
‘ভিটামিন ডি’ হাড়কে মজবুত করে। হাড় ক্ষয় যাতে না হয় এজন্য ‘ভিটামিন ডি’ এর ঘাটতি হতে দেয়া যাবে না। এর মূল কাজই হচ্ছে দেহের অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন ডি সামূদ্রিক মাছে থেকে পেতে পারেন। দুধ ও ডিম এ জাতীয় খাবারগুলোতে প্রচুর ‘ভিটামিন ডি’ পাওয়া যায়। ‘ভিটামিন ডি’ শরীরে ঠিক মতো থাকলে অস্ট্রিওকোলেসিসের মাত্রাও অনেক কমে যায়। 

 

‘ভিটামিন বি কমপেক্স’
‘ভিটামিন বি’ বা ‘ভিটামিন বি কমপেক্স’ শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। কারণ ভিটামিন বি৬ লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করে। আর ভিটামিন বি৯ ফলিক এসিড নামে পরিচিত। যা হার্টের রোগ, ক্যান্সার ও মেমরি বিকৃত এ ধরণের নানা রকম রোগের ঝুঁকি দূর করে দিতে পারে। সেই সঙ্গে ভিটামিন বি৬ বা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স শরীরের মেটাবলিজম কম করে। তাই স্মৃতিশক্তি অনেকটা বৃদ্ধি পায়। স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখতে এ ধরণের ভিটামিন শরীরে খুবই প্রয়োজন।

‘ভিটামিন বি৬’
অন্যদিকে, ‘ভিটামিন বি৬’ হোমস্টিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। হোমস্টিন হচ্ছে একটি অ্যামাইনো এসিড। যা হৃদরোগের অন্যতম কারণ। অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয় ‘ভিটামিন বি৬’। অনেক সময় বয়সের সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যায়। স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার সমস্যাও দূরে সরিয়ে দিতে পারে ‘ভিটামিন বি৬’। মাছ, মাংস, ওট মিল্ক, ফল ও সবজিতে প্রচুর ‘ভিটামিন বি৬’ পেতে পারেন। এসব খাদ্য বেশি পরিমাণে খেলে‘ ভিটামিন বি৬’ এর অভাব হবেনা। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় ‘ভিটামিন বি৬’,  ‘ভিটামিন বি৭’, ‘ভিটামিন বি৯’ ও ‘ভিটামিন বি১২’ থাকা খুবই জরুরি।

 

‘ভিটামিন ই ’ 
‘ভিটামিন ই’ বয়স বৃদ্ধি রোধ করে। হার্টকে ভালো রাখে ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে। সেইসঙ্গে চুল ও ত্বককে সুস্থ ও সঠিকভাবে রাখতে ‘ভিটামিন ই’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাদাম, কড লিভার অয়েল ও পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ‘ভিটামিন ই’ পেতে পারেন। এ ধরণের খাবারগুলো খেতে পারলে ‘ভিটামিন ই’ এর অভাব শরীরে কখনই হবে না। এছাড়াও সঠিকভাবে মাংসপেশীর কাজ করতে সাহায্য করে ‘ভিটামিন ই’। 

‘ভিটামিন সি’

‘ভিটামিন সি’ খুবই প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। শরীরের রক্ত চলাচলা থেকে শুরু করে শিরা ও ধমনীর দু’টোরই কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। কোষ গঠন করে ও নানা রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে রক্ষা করে ‘ভিটামিন সি’। এছাড়াও এটি দাঁতকে ভালো রাখে ও ত্বককে সুন্দর করে। কমলা লেবু, ব্রকলি, জাম্বুরা, স্ট্রবেরীতে প্রচুর পরিমাণে ‘ভিটামিন সি’ রয়েছে।