সালমান শাহ্র স্ত্রী সামিরা এখন কোথায়?
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:৪৫ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার

বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ্। এক সময়ের বহু নারীর ক্রাশ এই হিরোর রহস্যজনক মৃত্যু হয় ১৯৯৬ সালে। সেই সময় থেকেই সালমানের পরিবারের দাবি- মৃত্যু নয় (আত্মহত্যা) তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তবে ওই সময় সালমান শাহ্কে আত্মহত্যা হিসেবে দেখিয়ে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করলেও তাতে আপত্তি জানায় সালমান শাহর পরিবার। নায়কের বাবা কমরুদ্দীন আহমেদ প্রথম হত্যার অভিযোগ তোলেন। কমরউদ্দিনের মৃত্যুর পর সালমানের মা নীলা চৌধুরী এখনো ওই মামলা চালাচ্ছেন।
এদিকে, নীলা চৌধুরী (সালমানের মা) পুত্রবধূ সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ মোট ১১ জনকে ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আদালতে আবেদন করেন।
তবে, পানিতে ঘি ঢাললেন তাদের একজন গত বছর এক লাইভে এসে। সেই আসামিদের একজন সালমান শাহর বিউটিশিয়ান রাবেয়া সুলতানা রুবি তার মৃত্যুর বাইশ বছর পর ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছিলেন সালমান শাহ এবং তা করিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবার। এর পর আবারো আলোচনায় আসেন সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক।
এখন প্রশ্ন হল, খুন যেই করুক, সে এখনো আইনের আওতায় এলো না কেন? আর কোথায় বা আছেন সামিরা?
আজ ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য থাকছে এই সামিরাকে নিয়ে বিশদ আলোচনা। কোথায় আছেন সামিরা? কে ছিলেন তিনি?
এক নজরে সামিরা
সামিরার বাবা জাতীয় দলের সাবেক উইকেটকিপার অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা। মা থাইল্যান্ডের নাগরিক চট্টগ্রামের বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী লুসি। তার নামে চট্টগ্রামে একটি পার্লার রয়েছে। নাম লুসি বিউটি পার্লার।
সালমান শাহ্ মাত্র ২১ বছর বয়সে মা নীলা চৌধুরীর বান্ধবীর মেয়ে সামিরাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর বেশ ভালোভাবেই তাদের সংসার জীবন কাটছিল। মায়ের মতো সামিরাও বিউটি পার্লারের কাজে বেশ আগ্রহী ছিলেন এবং ঢাকায় একটি বিউটি পার্লারও খুলেছিলেন সামিরা।
তবে এক সময় সালমান-শাবনুর জুটিকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে-বাইরে কানাঘুষা শুরু হয়। আর এতে করে সালমানের সঙ্গে সামিরার মনোমালিন্য ঘটতে থাকে।
এরপর সালমানের মৃত্যু হলে তার মা নীলা চৌধুরী অভিযোগ করেন, সামিরার সঙ্গে বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং এ দু’জন মিলে সালমানকে হত্যা করেছে।
সে সময় সামিরাও পাল্টা অভিযোগ করেন, নীলা চৌধুরীই আজিজ ভাইসহ অনেক পুরুষকে তার বাড়িতে নিয়ে আসত এবং এটা নিয়ে সালমান ও তার বাবা নীলার উপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। এছাড়া সামিরা পুরো ঘটনার জন্য সালমান-শাবনুরের প্রেমকেও দায়ী করেন।
এক পর্যায়ে একেবারে আড়ালে চলে যান সামিরা। সালমানের মৃত্যুর কয়েক বছর পর ব্যবসায়ী মুস্তাক ওয়াইজকে বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ের পর দেশ ছেড়ে চলে যান থাইল্যান্ডে। সেখানে সামিরার নতুন সংসারে একটি ছেলে ও দুটি মেয়ে রয়েছে।
থাইল্যান্ডে সামিরার ছোট দুই বোন ফাহরিয়া হক ও হুনায়জা শেখ তাদের স্বামী সন্তান নিয়ে বাস করছেন। জানা গেছে, বর্তমানে সামিরা বাংলাদেশে তেমন আসেন না। আর আসলেও শুধু নিকট আত্মীয়দের সঙ্গেই দেখা করে চলে যান।
যাইহোক, সামিরার একটা ব্যবস্থাতো হলো কিন্তু সালমান প্রেমীরা এখনো জানতে পারলো না কোথায় কীভাবে খুন হলো তাদের প্রিয় নায়ক সালমান শাহ্? তাকে কী আদৌ খুন করা হয়েছিল নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। মৃত্যুর এত বছর পরে এসেও ভক্তদের একটাই দাবি, তাদের প্রিয় নায়কের খুনিদের যেন বিচারের আওতায় আনা হউক।
বস্তুত, এই ভক্তদের কাছে সালমান শাহ্ এখনো বেঁচে আছেন। বেঁচে আছে তার সব সিনেমা। ক্যারিয়ারের মাত্র অল্প সময়ে তিনি ২৭ টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন যা এখনো মানুষের মনে গেঁথে আছে। তাদের কাছে সালমান শাহ্ আজো মরে নাই, সালমান শাহ্ বেঁচে থাকবে যুগের পর যুগ।