শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১   ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ-ভারত

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:১৮ এএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার

ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি বিস্তার করছে। যেসব বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা চলছে, তার বাইরে গিয়ে উচ্চপ্রযুক্তি ক্ষেত্রগুলোয় দুই দেশ হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাবে। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিকস।

 

দুই দেশের পঞ্চম যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের পর শুক্রবার বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষ থেকে যৌথ প্রেস বিবৃতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনার এই কথা বলা হয়েছে। বৈঠক শেষে ঢাকা-নয়াদিল্লি ৪ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশের ১ হাজার ৮০০ সরকারি কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেবে ভারত। এছাড়া চিকিৎসা খাতের উন্নয়নে দুই দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে দুই দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন একসঙ্গে কাজ করবে। এছাড়াও মোংলায় অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগ সহায়তার জন্য ভারতের হিরোনদানি গ্রুপ ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও ভারতের প্রসার ভারতীর মধ্যে একটি চুক্তি বিবেচিত হচ্ছিল। তবে কেন তা হলো না, সে বিষয়ে কোনো দেশ কোনো মন্তব্য করেনি।

 

রাজধানী নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জওহরলাল নেহরু ভবনে শুক্রবার সকালে জেসিসির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন আর ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

ভারত সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন নয়াদিল্লিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জওহরলাল নেহরু ভবনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভারত, ৮ ফেব্রুয়ারি। ছবি: পিআইডিভারত সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন নয়াদিল্লিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জওহরলাল নেহরু ভবনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভারত, ৮ ফেব্রুয়ারি। ছবি: পিআইডি
ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি বিস্তার করছে। যেসব বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা চলছে, তার বাইরে গিয়ে উচ্চপ্রযুক্তি ক্ষেত্রগুলোয় দুই দেশ হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাবে। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিকস।

দুই দেশের পঞ্চম যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের পর শুক্রবার বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষ থেকে প্রচারিত যৌথ প্রেস বিবৃতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনার এই কথা বলা হয়েছে।

 

এই বৈঠকে মোট চারটি বিষয়ে দুই দেশ চুক্তিবদ্ধ হয়েছে—১. বাংলাদেশের ১ হাজার ৮০০ আমলাকে ভারত বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে। ২. বিকল্প চিকিৎসার বিকাশে ঔষধি গাছগাছড়া তৈরিতে ভারতের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ৩. বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা সিবিআইয়ের সঙ্গে ৪. মোংলায় ইন্ডিয়ান ইকোনমিক জোনে লগ্নি আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ চুক্তিবদ্ধ হলো ভারতের হীরানন্দনী গোষ্ঠীর সঙ্গে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও ভারতের প্রসার ভারতীর মধ্যে একটি চুক্তি বিবেচিত হচ্ছিল। কিন্তু কেন তা হলো না, সে বিষয়ে কোনো দেশ কোনো মন্তব্য করেনি।

রাজধানী নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জওহরলাল নেহরু ভবনে শুক্রবার সকালে জেসিসির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। জেসিসির বৈঠকের আগে জওহর ভবনেই দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একান্তে সাক্ষাৎ করেন। আধা ঘণ্টার ওই আলোচনায় পারস্পরিক চেনাজানার পাশাপাশি দুজনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়েও কথা হয়।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সম্পর্ককে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যা উন্নতমনা ও সুদূরপ্রসারীই শুধু নয়, যেখান থেকে পিছু হটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারি কর্তাদের বলেন, সম্পর্ককে এমন উচ্চতায় স্থাপন করতে হবে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সঙ্গে মানানসই হয়। ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি।

 

বৈঠকের শুরুতেই সুষমা স্বরাজ অভিনন্দন জানান আবদুল মোমেনকে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ যে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, সে কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, প্রথম সফর হিসেবে ভারতকে বেছে নেওয়া তার প্রমাণ। দুজনেই বলেন, সম্পর্কের সূত্রপাত মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। আজ ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি উভয়ের বিশ্বাস এবং উন্নয়ন আঁকড়ে এই সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভেশ কুমার জানান, বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কের বিস্তারিত আলাপ হয়। সম্পর্কের মাত্রা নিয়ে উভয় পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করে। দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক আস্থার সম্পর্ক সামনের দিনে আরো শক্তিশালী হবে বলেও এক টুইট বার্তায় জানান তিনি।

রাভেশ কুমার আরো জানান, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের আরো সমর্থন চান। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকেও এই সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে ঢাকার পাশে থাকার অঙ্গীকার করা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঢাকার পক্ষে জোরালো সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এই সময়ে নরেন্দ্র মোদি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে ঢাকার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

প্রসঙ্গত, দুই দেশের পঞ্চম যৌথ কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকে যোগ দিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় ভারত সফরে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ভারত সফর শেষে শনিবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।