বৃহস্পতিবার   ২০ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

সরকারি বাড়ি-গাড়ি বেতন-ভাতা নেন না ভূমিমন্ত্রী জাবেদ

ডেস্ক রিপোর্ট

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৬:৩৩ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার

ভূমিমন্ত্রী হলেও সরকারি বাড়ি-গাড়ি ও বেতন-ভাতা নিচ্ছেন না সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। ঢাকা ও চট্টগ্রামে তিনি নিজের বাসায় থাকেন, চড়েন ব্যক্তিগত গাড়িতে। মন্ত্রী হিসেবে সরকারি বেতনসহ প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধার সব টাকাই তিনি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও দুস্থদের মাঝে দান করে দেন।

 প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন সময়েও একই কাজ করতেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আগের মেয়াদে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর ঢাকার মন্ত্রিপাড়ার সরকারি বাসা বাদ দিয়ে গুলশানে নিজের বাড়িতে থাকতেন তিনি। তখন থেকেই ব্যবহার করেন না সরকারি গাড়ি-বাড়ি। রাষ্ট্রীয় কোনো কাজে চট্টগ্রামে আসলে সার্কিট হাউসে উঠেন না ভূমিমন্ত্রী জাবেদ। থাকেন নগরীর সার্সন রোডের পৈত্রিক বাড়িতে।

এ প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী সচিব রিদুয়ানুল করিম সায়েম বলেন, সরকারি বাড়ি-গাড়ি ব্যবহার করেন না স্যার। মন্ত্রী হিসেবে সরকারি বেতনসহ প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধার সব টাকাই তিনি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও দুস্থদেরকে দান করে দেন। প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন সময়েও তিনি একই কাজ করতেন।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলীয় সাংসদ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর জ্যেষ্ঠ ছেলে। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তার বড় ছেলে ব্যবসায়ী নেতৃত্ব থেকে উঠে আসা তরুণ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

এর আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ছিলেন বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল)-এর অন্যতম পরিচালক। প্রতিমন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর ইউসিবিএল’সহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

এদিকে দশম সংসদে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ কর্ণফুলী উপজেলা বাস্তবায়ন করেন। এ ছাড়াও ব্যাপক উন্নয়নকাজ করে কর্ণফুলী-আনোয়ারা উপজেলা বদলে দিয়েছেন। একই সাথে সততা ও দক্ষতার সাথে ভূমি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সততার পুরস্কার হিসেবে ভূমি মন্ত্রাণালয়ে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। মন্ত্রীর শপথ নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়কে ‘টপ ফাইভে’ নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করার পাশাপাশি উক্ত মন্ত্রণালয়ে বৈপ্ল­বিক পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন।

বিভিন্ন সময়ে ভূমি অফিসে ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ করে আলোচনায় আসা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ গত রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) পূর্বঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ অফিসে যান। এরপর সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ শুনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে কর্ণফুলী নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখে প্রশংসিত হচ্ছেন ভূমিমন্ত্রী। 

সরকারি বাড়ি-গাড়িসহ নানা সুযোগ-সুবিধা না নেয়া প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ’মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা আমি সৎ ও যথাযথভাবে পালন করতে চাই। আমার কাছে মন্ত্রিত্ব মানে একটা দায়িত্ব। মন্ত্রিত্ব আজ আছে, কাল হয়তো নাও থাকতে পারে। মন্ত্রী হলেই যে সরকারি বাড়ি ও গাড়ির সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে হবে তাতো না। তাছাড়া আমার তো বাড়ি-গাড়ির প্রয়োজন নেই। এখন যেভাবে আছি, তাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি’।