নিরীহ মানুষকে হয়রানি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:৩৬ এএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
নিরীহ মানুষ যাতে হয়রানি-নির্যাতনের শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুলিশ সপ্তাহ ২০১৯ উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ নির্দেশ দেন।
এ সময় জনগণের সমস্যাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশকে জনগণের কাছে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদ শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। একজন সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নেই।
বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিসান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা হয়। বাংলাদেশ পুলিশ সুদৃঢ় মনোবল, অসীম সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক ভিত্তি ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছে। শুধু দেশেই নয়, গত প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিজেদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
যুব সমাজকে রক্ষায় সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে- এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বাস করি, তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। তাই যুবসমাজ ধ্বংসকারী মাদকের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। মাদক নির্মূলে পুলিশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে চলেছে।
নিরাপদ সড়ক গড়তে সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ পুলিশ দেশের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, পুলিশে নারী সদস্যের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়ে ৭ শতাংশের অধিক হয়েছে। নারী পুলিশ সদস্যগণ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন পদে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। এ জন্য আমি নারী পুলিশ সদস্যদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।
পুলিশের চালু করা বিভিন্ন ডিজিটাল সেবার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের অনলাইনভিত্তিক সেবা প্রদান, মোবাইল অ্যাপস প্রবর্তন এবং তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণে বিভিন্ন সফটওয়্যার সংযোজন ও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার প্রশংসার দাবি রাখে। বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এর কার্যক্রমের ফলে সাধারণ মানুষের কাছে জরুরি সেবা (ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ) প্রাপ্তি সহজতর হয়েছে। ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম এবং সমসাময়িক অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণেও পুলিশ সদস্যদের প্রযুক্তগত দক্ষতা সময়ের সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটা অব্যাহত রাখতে হবে।
পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ এ সময় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজারবাগে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি সালাম গ্রহণ করেন। পরে সেবা ও সাহসিকতার জন্য বাহিনীর ৩৪৯ জন সদস্যকে বিপিএম ও পিপিএম পদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
