ফিরে দেখা: জহির রায়হান
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৫:৩৯ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার

১৯৭২ সালের আজকের এই দিনে (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশের বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক এবং গল্পকার জহির রায়হান মৃত্যুবরণ করেন।
জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ফেনী জেলার মাজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
স্কুল জীবন থেকেই লিখতে ভালোবাসতেন। তার লেখা গল্প, কবিতা ছাপা হত পত্রিকায়। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয় জহির রায়হানের জীবনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হাজার বছর ধরে।
১৯৫২ সালে তিনি ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি যে ১০ জন প্রথম ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেন তিনি তাঁদের অন্যতম। অন্যদের সঙ্গে তাঁকে মিছিল থেকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করা হয়।
১৯৫৬ সালে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ১৯৬১ সালে তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কখনও আসেনি’ মুক্তি পায়। তার পর একের পর এক তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে থাকে। তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে, কাজল, কাঁচের দেয়াল, বেহুলা, জীবন থেকে নেয়া, আনোয়ারা, সঙ্গম এবং বাহানা। জীবন থেকে নেয়া ছবিতে প্রতীকী কাহিনীর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনকে চিত্রিত করা হয় এবং জনগণকে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে উদ্বুদ্ধ করা হয়। ছবিটি উভয় বাংলাতেই মুক্তি লাভ করে।
১৯৭১ সালে জহিরের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা প্রখ্যাত লেখক শহিদুল্লা কায়সার কে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তাঁর বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি খবর পান যে, শহিদুল্লা কায়সারকে ঢাকার মিরপুরে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁকে উদ্ধারের জন্য সেখানে যান। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। ওই দিনটি জহির রায়হানের অন্তর্ধান দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বাংলা সাহিত্যের গল্প শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৭৭ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারেভূষিত করে। চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে ১ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে মরণোত্তর বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।