ভুয়া যত বৈজ্ঞানিক বিশ্বাস!
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:৪২ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ সোমবার

একটি বৈজ্ঞানিক ধারণা উল্লেখ আছে যে পানিতে বিদ্যুৎ পরিবহন হয়। অথচ তাই-ই যদি হতো তাহলে কোনো বজ্রপাত ঝড়ের রাতে কেউ সাতার কাটতে যেতো না।
কারণ এ মতবাদ অনুযায়ী মৃত্যু হতো অবধারিত। অথচ যে কোনো বিশুদ্ধ পানি হয় অপরিবাহক। অর্থাৎ এ দিয়ে কোনো বিদ্যুৎ পরিবহন সম্ভব না। তবে মিনারেলস বা কেমিক্যাল পানিতে ইলেকট্রিক আয়ন থাকার ফলে এর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে। যদিও বিশুদ্ধ পানি বিদ্যুৎ অপরিবাহক তবে পাতনকৃত পানি হয় যথেষ্ট পরিমাণ আয়ন যুক্ত। এতে খানিকটা সন্দেহ বা আতংক থেকেই যায়।
২. একটি প্রচলিত পৌরাণিক বৈজ্ঞানিক মতবাদ আছে যে, আমাদের ভেতরের রক্ত নীল যেটি বাইরে অক্সিজেনের সংমিশ্রণে লাল রঙ ধারণ করে। যেহেতু আমাদের শিরা ও ধমনী সবুজাব নীল রঙের সে কারণে অনেকেই এই মতবাদে বিশ্বাস করে। কিন্তু আমাদের মানবজাতির শরীরের ভেতর ও বাহিরের অবস্থা দেখতে একই রকম। যে কারণে এটি বাইরে বেরুলে নীল থেকে লাল হয়ে উঠবে সে কথা বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠে না। মূলত এর প্রধান তথ্য হলো আমাদের রঙ পরিবর্তনশীল এ সত্য, তবে আংশিক।
আমাদের রক্ত যখন অক্সিজেন পরিপূর্ণ থাকে তখন এটি গাঢ় রঙ ধারণ করে আর যখন এটি অক্সিজেনের ঘাটতিতে থাকে তখন সেটি হালকা লাল বর্ণের হয়। তবে লাল লাল-ই থাকে। আমাদের শরীরের কোষগুলো শিরা ধমনীর নীল রঙ দিয়ে প্রভাবিত হয় বলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাকালীন সময়ে এটি নীল বা সবুজ দেখায়। তাই বলে আমাদের রক্ত নীল নয়।
৩. একটি পৌরাণিক তথ্য আছে যে মানবজাতির পরিপূর্ণ ব্রেইনের মাত্র শতকরা ১০ ভাগ ব্যবহার করে জীবন অতিবাহিত করে। প্রচলিত মত অনুযায়ী ব্রেইনের ৯০ শতাংশ অঞ্চলকে বলা হয় সাদা অংশ। যেটি ব্রেইনের নিউরোনকে বাচিয়ে রাখতে সহায়তা করে। অপরদিকে বাকি ১০ ভাগকে বলা হয় ধূসর অংশ যেটি কি না আমাদের বুদ্ধি, কাজে, চিন্তায় প্রকাশ পায়। তারমানে আমাদের ব্রেইনের ৯০ ভাগ অংশই নষ্ট হয় যেমন করে আমরা বাদাম খেয়ে খোসা ফেলে দেই তেমন করে? মোটেও তা নয়। (MRI) এম আর আই স্ক্যান করলে দেখা যায় শুধুমাত্র ১০ ভাগই না। আমাদের ব্রেনের অনেক অংশ আমরা কাজে লাগাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এ কেবল ভুয়া তথ্য মতামত। বিজ্ঞানীরা আমাদের ব্রেনের নানা অংশ গবেষণা করে দেখেন আমাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ ব্রেনের বিভিন্ন অংশ থেকে কার্যকর হয়। মোটেও শুধুমাত্র ১০ ভাগ অংশ থেকে নয়।
৪. একটি প্রচলিত ব্যাখ্যা আছে যেটিতে বলা হয় চীনের গ্রেট প্রাচীর সুদূরবর্তী চাঁদ থেকেও দেখা যায়। এটি মানুষের তৈরি এমন এক অবাস্তব প্রাচীর। ১৯৩২ সালে সর্বপ্রথম এই দাবি উত্থাপন করা হয়। যেটি প্রায় বেশ ক’বছর পূর্বের কথা। কিন্তু আজো আমরা অনেকে আছি যারা এ তথ্য মেনে গ্রেট প্রাচীরের প্রতি মুগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করি।
কিন্তু মজার সত্য তথ্য হলো এ পর্যন্ত যেসব মহাকাশচারীরা চাঁদে গিয়েছেন তারা বলেন যে, মহাকাশ বা স্পেসশিপ কিছু থেকেই এ প্রাচীর দেখা যায় না। এবং সম্ভব ও না। অথচ আমরা চিরকাল এক ভুল ধারণা নিয়ে পার করছি।
৫. আরো একটি বৈজ্ঞানিক মতবাদ আছে যেখানে উল্লেখ করা পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ যেখানে পানির অস্তিত্ব বিদ্যমান। মহাকাশ বা সৌরজগত নিয়ে আমাদের আছে হাজারো জল্পনা-কল্পনা। প্রাণের অস্তিত্ব আছে কী নেই এই ভূখণ্ড ছাড়া তা আমরা আজ পর্যন্ত নিশ্চিত নই। তবে আমরা জানি পানি ছাড়া কোনো গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণী থাকাও অসম্ভব। তবে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি প্রমাণ পেয়েছেন বেশ কিছু গ্রহেই আছে পানির অস্তিত্ব। লাল গ্রহ মঙ্গলেও আছে পানির প্রভাব। বরফ ও লবণাক্ত পানির খোজ পেয়েছেন লাল গ্রহে নাসার বিজ্ঞানীরা। অপরদিকে জুপিটারের উপগ্রহ ইউরোপায় আছে সাগর যেটি কি না আমাদের পৃথিবীর মতোই পানিতে ভরপুর। তবে সেখানে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব আছে কী না তা বিজ্ঞানীরা আজো জানতে পারেনি। তা একমাত্র জানাবে হয়তো সময়!