মঙ্গলবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১৫ ১৪৩২   ১০ রজব ১৪৪৭

প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এক বেকার যুবকের গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৪৫ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

প্রতি হিংসার রাজনীতি নয়, আমাদের সবার উচিত সহানুভূতির রাজনীতি করা। সম্প্রতি রাজু আহমেদ নামে এক যুবকের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তার ভালোবাসার আর শ্রদ্ধার বিষয়টি ফুটে ওঠেছে।

ভিডিওতে দেখা যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিতে ইচ্ছাকৃত লাগানো রঙ সে টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করছিল। বিষয়টি দেখতে পেয়ে সন্দেহবশত গাজীপুর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী সরকার ভিডিও করে রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু রাজু জানায়, তিনি টিস্যু দিয়ে নেত্রীর বিকৃত ছবি পরিষ্কার করছিল। এতে মেহেদী বিব্রত হয়; নিজের ভুল বুঝতে পারে। পরে সে ফেসবুকে ভিডিওটি আপলোড করলে ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এরপর শুরু হয় তদন্ত। তখন বেরিয়ে আসে চরম বাস্তবতায় আর ভালোবাসার এক গল্পের ইতিহাস।

রাজুর বাবা পেশায় একজন চা বিক্রেতা। মানুষের সহযোগিতায় সে লেখাপড়া করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। এরপর উত্তরায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিএটিতে ভর্তি হয়। রাজুর পরিবারের কথা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে চাকরি খুঁজতে থাকে। কিন্তু চাকরি আর হয় না।

গতমাসে আয়কর মেলা উপলক্ষে গাজীপুরে বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের সামনে প্লাক্যার্ড ও ফেস্টুন লাগানো হয়। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ছবির মুখে ইচ্ছেকৃতভাবে লাল রঙ লাগিয়ে দেয়া হয়। রাজু সেটি দেখে আপনমনে রঙ মুছতে থাকে। এরপর তৈরি হয় ইতিহাস।

ফেসবুকের কল্যাণে তরুণদের কাছে রাজু আহমেদ এখন পরিচিত নাম। বন্ধুরা অনেকেই এখন তার সঙ্গে ছবি তুলতে গর্ববোধ করে। গত ১৪ ডিসেম্বর গণভবনে ইশতেহার কমিটির বৈঠক শেষে ইশতিহার কমিটির সদস্য দীপক কুমার বনিক দীপু প্রধানমন্ত্রীকে রাজুর ভালোবাসার ভিডিও দেখান। প্রধানমন্ত্রী দেখে অবাক হন এবং রাজুর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

সেদিন রাতে ইশতেহার টিমের এক সদস্য এবং যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল হোসেন ফেসবুকে যুবকটির সন্ধান চাই সংক্রান্ত পোস্ট দেন। সেই সাংবাদিকের বন্ধু গাজীপুরের একটি গার্মেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাজুর সন্ধান দেন। পরে রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ঢাকায় আসতে বলেন আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান রাজু আহমেদ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিনের ঘটনা শুনে বিস্মিত হন। তার পরিবারের খোঁজ-খবর নেন। এরপর রাজুকে ফারমার্স ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর আপ্লুত রাজু। তিনি মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসায় বিস্মিত।

তিনি জানান, এদেশের তরুণদের মনের কথা বুঝতে পেরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়েছেন।