বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে কর্মসংস্থান হবে এক লাখ তরুণের: পলক
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:৪৯ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ হবে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হবে প্রায় এক লাখ তরুণ-তরুণীর।
বুধবার বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শনে যান প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পরিদর্শনকালে বিনিয়োগ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প স্থাপনা, জাতীয় তথ্য কেন্দ্রসহ পার্কের বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় পলক বলেন, ১৯৯৯ সালে বিনিয়োগ বোর্ডের ১২তম সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কিন্তু পরবর্তী সরকার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবারো হাইটেক পার্ক আলোর মুখ দেখে। বর্তমানে এই পার্ক থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আইটি পণ্য রফতানি শুরু হয়েছে।
পরিদর্শন শেষে হাইটেক পার্ক প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে পলক বলেন, এ প্রকল্পের জন্য আমরা প্রথমে ২৩২ একর জায়গা পাই। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো ৯৭ একর জায়গা দেন। আরো কিছু মিলিয়ে বর্তমানে আমাদের এখানে জায়গা আছে প্রায় ৩৫৫ একর।
তিনি বলেন, আগে থেকে আমাদের এখানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছে। আর নতুন দেয়া ৯৭ একর জায়গা আরো ১৮টি কোম্পানিকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রায় দুই লাখ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট টেকনো সিটি বিডি লিমিটেড, ২৭ হাজার ২৬০ বর্গফুট আয়তনের উপর সার্ভিস বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে দুটি আইটি প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি ) প্রোডাক্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে। এছাড়া ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনার কাজ প্রায় শেষ। নতুন বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোও দ্রুত তাদের স্থাপনা নির্মাণে কাজ শুরু করবে।
চলতি বছরের জুনেই জাতীয় তথ্য কেন্দ্র বাণিজ্যিক কার্যক্রমে আসছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। জাতীয় তথ্য কেন্দ্র সরকারি চাহিদা মিটিয়ে প্রয়োজনে বেসরকারি খাত থেকেও মুনাফা অর্জন করবে বলেও জানান তিনি।
ডাটা সেন্টারের বিভিন্ন উইং পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের পলক বলেন, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে এই হাইটেক পার্ক সিটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও এক বছর আগে চলতি বছরেই বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যাচ্ছে আমাদের ডাটা সেন্টার। চীনের সহযোগিতায় প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এখানে গড়ে উঠছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টায়ার ফোর ডাটা সেন্টার। ইতিমধ্যে এই জাতীয় ডাটা সেন্টারে ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ‘ট্রায়াল’ ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, এরই মধ্যে এই পার্ক থেকে আইটি পণ্য রফতানি শুরু হয়েছে। শিগগিরই এখানে মোবাইল ফোন ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন হার্ডওয়ার পণ্য উৎপাদিত হবে।
বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সচিব হোসনে আরা বেগম জানান, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক সিটিতে প্লট বরাদ্দ নেয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আমরা বিনিয়োগকারীদের সব রকম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি । দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৪টি প্রণোদনা সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে এখানে। এসব কার্যক্রম আরো সহজ করার জন্য বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। সম্প্রতি আমরা অনলাইন ভিত্তিক ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছি যা দেশি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আরো আগ্রহ সৃষ্টি করবে।
প্রতিমন্ত্রীর হাইটেক পার্কে পরিদর্শনকালে বিনিয়োগকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, আইসিটি খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
