সোমবার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১৪ ১৪৩২   ০৯ রজব ১৪৪৭

দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৬:০৫ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেটা প্রয়োজন, সেটাতো আমরা মিটাচ্ছি। তাহলে দুর্নীতি কেন হবে। মন-মানসিকতাটা পরিবর্তন করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আপনাদের দিতে হবে একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত।
 
টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এদিন পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত সরকারের সময়ের মতো মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বাড়াতে এবং সৃজনশীলতার বিকাশে এবারো পর্যায়ক্রমে সবগুলো মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জনপ্রশাসন দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

শেখ হাসিনা জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট একটি নির্দেশনা দিতে হবে- কেউ দুর্নীতি করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, কারণ যে হারে বেতন আমরা বাড়িয়েছি এ উদাহরণ মনে হয় পৃথিবীর কোনো দেশেই নেই।

সন্ত্রাস-মাদক-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত থাকবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ সময় লক্ষ্য বাস্তবায়নে তার সরকার সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন বলেও জানান তিনি।
 
উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি তা আমরা পূরণ করতে পারবো। এর জন্য প্রয়োজন সুশাসন। তার জন্য দরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা।

প্রধানমন্ত্রী জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সততা-আন্তরিকতা নিয়ে জনসেবা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটা সরকার পরিচালনার মূল জায়গাটায় হল আপনাদের এই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আপনাদের সেভাবে কাজ করতে হবে, আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে অনুরোধ করবো, একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, দেশটা আমাদের। আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। আজকে সারাবিশ্বে একটা সম্মানজনক জায়গায় আসতে পেরেছি।

স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বক্ষেত্রে এই ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করতে হবে। এর মাধ্যমে আমি মনে করি স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে।

গত অর্থবছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে এবং আগামী ৫ বছরে এই প্রবৃদ্ধি তার সরকার ১০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কাছে অর্থনৈতিক সুফলটা পৌঁছে দেয়া এবং সেজন্য আমরা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বাস্তবমুখী অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা যদি যথাযথভাবে সেটি বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সেই লক্ষ্য আমরা অবশ্যই অর্জন করতে পারবো।
 
তার সরকার মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হলেই জনগণ অর্থনীতির সুফলটা ভোগ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়নের সব থেকে বড় সুফল এটাই। কারণ অনেক দেশ অনেক দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, তবে সঙ্গে সঙ্গে তাদের মূল্যস্ফীতিও অনেক বেড়ে যায়। সেখানে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর গেল ৭ জানুয়ারি ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন।
 
প্রধানমন্ত্রীত্বের পাশাপাশি শেখ হাসিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।