মার্চের মাঝামাঝিতে ভোট
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:৫৬ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন আগামী মার্চে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মাঝেই সম্পন্ন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
একাদশ জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসন, ৪৯২টি উপজেলা পরিষদ এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হলো উচ্চ আদালতের রায়ে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়দ পদে উপনির্বাচন। মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এই পদটিতে নির্বাচন কমিশন ভোটের তফসিল ঘোষণার পর সিটির সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে করা রুল হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়ায় নতুন করে ভোট আয়োজনে আর কোনো বাঁধা নেই বলেই মনে করছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা।
রিট খারিজের রায়ের পর বুধবার বিকেলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোট আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি রয়েছে। রায়ের কপি ইসিতে আসার পর এ বিষয়ে কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। খুব শিগগিরই এ নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। এদিকে আগামী মার্চের মধ্যেই উত্তর সিটিতে ভোট সম্পন্ন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। মার্চে শুরু হওয়া উপজেলা নির্বাচনের মাঝেই এটি সেরে ফেলা হবে বলে জানান তিনি।
রিট খারিজের আদেশের পর বিকেলে রাজধানীর আগাগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সিইসি বলেন, ভোটের বিষয়টি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বসতে হবে। আমরা তাড়াতাড়ি এ নির্বাচন করে ফেলব।
তিনি জানান, আগামী মার্চে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদের মাঝেই এ নির্বাচন করা হবে। এখানে পুনর্তফসিল করা হবে। বসতে হবে সবার সঙ্গে। তাড়াতাড়ি করে ফেলব। এতে উপজেলা নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানান সিইসি।
এর আগে আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) প্রথম সপ্তাহে তফসিল দিয়ে মার্চের প্রথম থেকে পাঁচ ধাপে উপজেলা নির্বাচন করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।
আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ধার্য রেখে তফসিল দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
ওই তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং তফসিলের কার্যকরিতার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।
তাদের আবেদনের ওপর শুনানি করে গতবছর ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়। ওই নির্বাচনের তফসিল কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করা হয়।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল বিভাগে গেলে সেখানে হাইকোর্টের দেয়া রুল ‘দ্রুত নিষ্পত্তির’ আদেশ আসে।
পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার বিষয়টি রুল শুনানির জন্য বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে ওঠে। কিন্তু রিটকারী বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কেউ আদালতে না থাকায় আদালত রুল খারিজ করে দেয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষে আদালতে উপস্থিত আইনজীবী কাজী মাইনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন হতে আইনগত কোনো বাধা এখন নেই। তবে বাদীপক্ষ চাইলে রুলটি আবার পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করতে পারে।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষ ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভুঁইয়া বলেন, তার মক্কেল এ রিট চালাতে আর আগ্রহী নন। সে কারণে এনিয়ে আর আগানো হয়নি।
রিটকারীর অনাগ্রহের কারণেই আদালত ডিসচার্জ অব ডিফেন্স (ডিডি) অর্ডার দিয়েছে। ফলে নির্বাচন পরিচালনার জন্য আর কোনো বাধা থাকছে না।
গত বছরের ৯ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ধার্য রাখা হয়েছিল। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল ১৮ জানুয়ারি, প্রত্যাহার ১৯ জানুয়ারি, যাচাই-বাছাই ২১-২২ জানুয়ারি ও প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ জানুয়ারি ধার্য করা হয়েছিল।
