এই দুই কাজ করলে ক্যান্সার হবে ‘গায়েব’!
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:২৩ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

সারাবিশ্বেই ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা চলছে। প্রতিবছরই রোগটি নিয়ে বের হয়ে আসে চমকপ্রদ নানা তথ্য। আবিষ্কার হয়েছে বহু ঔষধ। এরমধ্যে কোনটা খানিকটা কার্যকারি, আবার কিছু ঔষধের সফলতা খুব বেশি নয়। ২০১৭সালের শেষ দিকে মারণ এই রোগকে নির্মূল করতে কিউবার একটি ছোট দলের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন একটি বিস্ময়কর টিকা। এই টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই লেগে যায়। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই টিকার সাহায্যেই ক্যান্সার রোগ নির্মূল করা সম্ভব।
গত দুবছরে এই ঔষধের কল্যাণে ১৩হাজারেরও বেশি ক্যান্সার রোগী স্বাভাবিক মানুষের মতোই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিউবার বিজ্ঞানীদের অসাধ্য সাধন কর্মকাণ্ডের প্রসংশা করেছেন সায়েন্টিফিক কমিউনিটি। শুধু বিজ্ঞানীরাই নন, বহু চিকিত্সকও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে আক্রান্তদের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ করেছেন। এই টিকা সেবনের পর ওই রোগীদের শরীর থেকে ক্যান্সারের কোষের দেখা মেলেনি।
কিউবা বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই টিকায় ইউটেরাস, প্রস্টেট ও ব্রেস্ট ক্যান্সার শুধু প্রতিরোধ নয়, সেরেও যায়। বিজ্ঞানীদের দাবি, তারা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। এই টিকার বেশ কিছু দিক রয়েছে-
- ক্যান্সারের অ্যাডভান্সড স্টেজেও কাজ করবে টিকা।
- ব্রেস্ট, ইউটেরাস, প্রস্টেট ক্যান্সারের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
- নতুন টিকার প্রয়োগে সেরে যাবে এই ক্যান্সারগুলোও।
- কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।
দেশটির বিজ্ঞানীরা ক্যান্সারের ঔষধ আবিষ্কার করতে দীর্ঘদিন ধরে নানা পরীক্ষা করেছেন। কিন্তু এই রোগের হাত থেকে মুক্তির সমাধান খুঁজতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের। কিউবার বিজ্ঞানীর সাফল্যের ভাগ পাবার যোগ্য আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন! তিনি কোনো বিজ্ঞানী নন, কিন্তু রিচার্ড নিক্সন-ই সর্বপ্রথম ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন। সময়টা ছিলো ১৯৭১ সালের মাঝামাঝিতে। তিনি সেসময়ে ক্যান্সারের গবেষণাতে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেন এবং বিশ্বাস করতেন খুব দ্রুত এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মানুষ জয়ী হবে। কিন্তু এর ৪৪ বছর পরেও ক্যান্সার আমেরিকার জনগণের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর যত মানুষ মারা যায় তারমধ্যে ২৫% মানুষ ক্যান্সারে মারা যায়, যুক্তরাজ্যে এই হার ২৯%। রিচার্ড নিক্সনের উদ্যোগ নেয়া গবেষণায় বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য। যা কিউবার বিজ্ঞানীরা সঠিকভাবেই প্রয়োগ করেছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রায় ১২ লক্ষ ক্যান্সার এর রোগী আছে। প্রতিবছর ২ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং ১.৫ লক্ষ মানুষ মারা যায়। ক্যান্সার চিকিৎসার ধাপগুলো এত সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল, এবং কষ্টসাধ্য যে অনেক সময় আমাদের চিন্তায় পড়তে হয় কোনটা বেশি খারাপ – ক্যান্সার নাকি রোগ সনাক্তকরণ পরবর্তী চিকিৎসা? ১৯৭১ সালে, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিপ্লবের আগে ক্যান্সার একটি রহস্য ছিলো।
কিন্তু এই রহস্যকে মুচড়ে দিলেন কিউবার বিজ্ঞানীরাই। তাদের আবিষ্কৃত এই টিকা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। এর কারণ, এ পর্যন্ত ক্যান্সারের যতো ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে এটিই সবচেয়ে বেশি কার্যকর ও সহজ পদ্ধতি। এ আগে ক্যান্সারে আক্রান্তরা কেমোথেরাপি কিংবা রেডিয়েশন পদ্ধতির ওপর নির্ভর ছিলো। যা খুবই কষ্টকর একটি পদ্ধতি।
জানা গেছে, কিউবার আবিষ্কৃত হওয়ায় এই টিকা সে দেশের মানুষদের বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। কিউবার মেডিক্যাল সার্ভিসেস-এ আপনি নিজেও যোগাযোগ করতে পারবেন এর জন্য। প্যারাগুয়ে, কলোম্বিয়াতেও এই টিকা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, ন্যাশানাল সেন্টার ফর হেলথ থেকেও এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে www.inor.sld.cu ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
বিজ্ঞানের দুনিয়াতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। কোনো গবেষণার ফল আমরা দেরিতে পাই, কোনো গবেষণার ফল পাই খুব দ্রুত। সেদিন খুব দূরে নয় যেদিন ক্যান্সারের মতো রোগের বিরুদ্ধে আরো সফলতার সাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।