ভারতের অরুণাচল প্রদেশ চায় চীন
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০৮ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
চীনের দীর্ঘমেয়াদি ‘জাতীয় স্বার্থের’ প্রেক্ষিতে অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের মানচিত্রে চায় বেইজিং। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের দেওয়া এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া’র
মার্কিন কংগ্রেসে জমা দেওয়া ওই প্রতিবেদনে চীন অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের ঘোষিত ‘কোর ইন্টারেস্ট’ হিসেবে বিবেচনা করছে। এই তালিকায় অরুণাচল প্রদেশের পাশাপাশি তাইওয়ান এবং দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বিরোধপূর্ণ অঞ্চলগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব ইস্যু চীনের দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু। বেইজিংয়ের নেতৃত্ব ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন’ অর্জনের লক্ষ্যে তাদের কোর ইন্টারেস্টের পরিধি সম্প্রসারণ করেছে।
পেন্টাগন বলছে, চীনা কর্মকর্তারা বিশেষ করে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে বিতর্কিত অঞ্চলগুলোর একীকরণকে জাতীয় পুনরুজ্জীবনের একটি ‘স্বাভাবিক প্রয়োজন’ হিসেবে তুলে ধরছেন। এই লক্ষ্য পূরণে চীন একটি ‘বিশ্বমানের’ সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চায়।
ভারত-চীন সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ভারত ও চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) বরাবর অবশিষ্ট সংঘর্ষপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহারে একমত হয়। এই ঘোষণার মাত্র দুই দিন পরই ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওই বৈঠকের পর থেকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, সরাসরি বিমান চলাচল, ভিসা সুবিধা এবং শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক বিনিময়সহ বিভিন্ন বিষয়ে মাসিক উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে।
পেন্টাগনের মতে, এলএসি উত্তেজনা কমিয়ে চীন মূলত ভারত-চীন সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হওয়া ঠেকাতে চাইছে। তবে পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে নয়াদিল্লি এই সম্পর্কে সতর্ক অবস্থান বজায় রাখবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি চীন ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও কৌশলগত সহযোগিতার দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চীন-পাকিস্তান যৌথভাবে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে এবং পাকিস্তানই বর্তমানে চীনের তৈরি জে-১০ বহুমুখী যুদ্ধবিমানের একমাত্র ক্রেতা। এছাড়া চীন পাকিস্তানকে সশস্ত্র ড্রোন সরবরাহ করেছে এবং নৌবাহিনীর ক্ষেত্রেও বেইজিং ইসলামাবাদের প্রধান সরবরাহকারী।
অস্ত্র সরবরাহের বাইরেও পেন্টাগন রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে জিবুতির বাইরে চীনের বিদেশি সামরিক ঘাঁটি সম্প্রসারণ কৌশলের অংশ হিসেবে পাকিস্তানকে পিপলস লিবারেশন আর্মি-এর সম্ভাব্য লজিস্টিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
