জি এম কাদেরের জাপা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৫১ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা) নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেও প্রার্থী সংকটে ভুগছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় নৌকার ভোট পেয়ে লাঙল অভাবনীয় কিছু করতে পারে–এমন সম্ভাবনার কথা বলা হলেও জাপার মনোনয়ন নিয়ে আগ্রহ নেই। গত বুধবার থেকে শুরুর পর পাঁচ দিনে দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ৬৭ জন। এ কারণে তিন দিন সময় বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাপার জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট আজ মঙ্গলবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। এই জোটের ৬টি নিবন্ধিত দলের একটি আওয়ামী লীগের ১৪ দলের শরিক আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি-জেপি। অন্যগুলো হলো– বিএনএম, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, মুসলিম লীগ ও তৃণমূল বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) বৃহত্তম সুন্নি জোট আসতে পারে জেপি-জাপার (আনিস) জোটে।
লাঙ্গলে আগ্রহী কম
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে গত চারটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ফ্যাসিবাদের দোসর তকমা পায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি (জাপা)। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন একতরফা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাপা ৩৪ আসন পেয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল; যোগ দেয় সরকারেও। ২০১৮ এবং গত বছরের নির্বাচনেও তারা বিরোধী দল হয়।
আওয়ামী লীগের সুরে কথা বলে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ তকমা পাওয়া জাপা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর চাপে পড়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতৃত্বের আপত্তিতে তাদের কোথাও ডাকা হচ্ছে না। একাধিকবার জাপা কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। জি এম কাদেরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা মামলার আসামি হয়েছেন। নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধে অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ নেতাকে নিয়ে একই নামে দল করেছেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম।
এবার ৬৭টি ফরম মনোনয়ন ফরম বেচার তথ্য কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর দাবি, সংখ্যাটি দুই শতাধিক। তিনি সমকালকে বলেছেন, ২৫ বা ২৬ ডিসেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে। চেষ্টা থাকবে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণার।
জি এম কাদেরের সঙ্গে থেকে যাওয়া জ্যেষ্ঠ নেতারাও নির্বাচনে আগ্রহী নন। একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য সমকালকে বলেছেন, গতবার সাড়ে ৩ কোটি টাকা খরচ করেও ভোট আসেনি। এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ। নৌকার ভোট লাঙ্গলে আসবে–এ সম্ভাবনা নেই।
আরেক জাপা টিকে থাকতে নির্বাচনে
জাপার অন্য অংশের নেতৃত্বে থাকা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারও শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। আওয়ামী লীগ আমলে এমপি ছিলেন। তাদের জোটের শরিক দলের অধিকাংশ আওয়ামী লীগ মিত্র। জোটটির একাধিক নেতা সমকালকে বলেছেন, এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রধান লক্ষ্য রাজনীতিতে টিকে থাকা।
জোটের শরিকদের মধ্যে আসন কীভাবে বণ্টন হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। রুহুল আমিন হাওলাদার সমকালকে বলেছেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। সুন্নি জোটের তিনটি দলের সঙ্গে জোট করতে আলোচনা চলছে। আজ তারা সিদ্ধান্ত জানাবে। সুন্নিপন্থি দলগুলোর জোট ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল।
