শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৫ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ঊনবাঙালের বর্ণাঢ্য বিজয় দিবস উদযাপন

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:২৪ এএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার


 
 
ঊনবাঙালের বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো ৫৫৩ম বিজয় দিবস। গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার "বিজয় দিবস ২০২৫" এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন বর্ষীয়ান সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব মুত্তালিব বিশ্বাস। বাংলাদেশের শীর্ষ বুদ্ধিজীবী, চিন্তক এবং কবি ফরহাদ মজহার ভিডিও বক্তব্যের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান এবং বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি ঊনবাঙালের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে    প্রবাসে এই সংঠনের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রশংসা করেন। 
কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির ফ্লাশিং অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কবি কাজী জহিরুল ইসলাম ও মুক্তি জহির। বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। 

কাজী জহিরুল ইসলামের গ্রন্থনা ও সৈয়দ মাসুদুল ইসলাম টুটুলের নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় এক ঘন্টার একটি গীতি-কাব্যালেখ্য "বিজয় একটি খোলা জানালা"। গীতি-কাব্যালেখ্যটিতে ৮টি গান, বেশ কিছু কবিতা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি সংবলিত বিবরণ ছিল যা দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। যে গানগুলো সন্নিবেশিত হয় সেগুলো হচ্ছে: নঈম গওহরের লেখা এবং সমর দাসের সুর করা "নোঙ্গর তোলো তোলো, সময় যে হলো হলো", গোবিন্দ হালদারের লেখা এবং আপেল মাহমুদের সুর করা "মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি", আপেল মাহমুদের লেখা ও সুর করা "তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে", খান আতাউর রহমানের লেখা ও সুর করা "এক নদী রক্ত পেরিয়ে বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা", কাজী জহিরুল ইসলামের লেখা এবং সুজিত মোস্তফার সুর করা, "রাঙা রাজপথ শত শহীদের রক্তের আলপনা", নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা এবং আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুর করা "সব কটা জানালা খুলে দাও না", আবদুল লতিফের লেখা ও সুর করা "সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা" এবং গোবিন্দ হালদারের লেখা ও সমর দাসের সুর করা "পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল"। এ ছাড়া গীতি-কাব্যালেখ্যটিতে ব্যবহৃত কবিতাংশগুলো নেওয়া হয়েছে কবি শামসুর রাহমান, কবি আল মাহমুদ, মার্কিন কবি অ্যালান গিন্সবার্গ এবং কবি কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা থেকে। এতে অংশগ্রহণ করেন: সৈয়দ মাসুদুল ইসলাম টুটুল, মিতা হোসেন, বুলা আফরোজ, মোহাম্মদ শানু, নজরুল ইসলাম, রেজা কামাল, মুক্তি জহির, রেণু রোজা, রওশন হক, দেলোয়ারা কামাল, আবিদা সুলতানা, শাহীনূর নদী, চমক ইসলাম, আহসান হাবিব, দিমা নেফারতিতি, কাজী জহিরুল ইসলাম। তবলায় সঙ্গত করেন দেবু চৌধুরী। 

    
  

শিল্পীরা শেষ গান " পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে" গাইতে শুরু করলে দুই প্রজন্মের দুই মানুষ প্রকৌশলী সৈয়দ ফজলুর রহমান এবং শিশু আরহাম বাংলাদেশের এক বিশাল পতাকা নিয়ে মঞ্চে উঠে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রজন্মের মানুষ ফজলুর রহমান পতাকাটি নতুন প্রজন্মের আরহামের হাতে তুলে দেন এবং আরহাম তা দুই হাতে ডানে-বায়ে দুলিয়ে ওড়াতে থাকে। এই দৃশ্যে উপস্থিত দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে করতালি দিতে থাকেন। 

অনুষ্ঠানে প্রবাসে জন্ম ও বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের তিন শিল্পী দানিয়েল ইসলাম, ঋত্যুজা ব্যানার্জি এবং সৌভিত চৌধুরী বাংলা গান পরিবেশন করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

স্বরচিত কবিতা পাঠ পর্বে অংশ নেন: কাজী জহিরুল ইসলাম, সজল আশফাক, সোহেল হামিদ, দেওয়ান নাসের রাজা, রওশন হক, রেণু রোজা, মিতা হোসেন, শাহীনূর শাণূ নদী, সালেহা ইসলাম এবং শেলী জামান খান।

বিখ্যাত কবিদের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন: জিএম ফারুক খান, দিমা নেফারতিতি, আহসান হাবিব, মোহাম্মদ শানু,  জুবায়ের হোসেন এবং এম এ সাদেক।

সবশেষে ছিল ঊনবাঙালের শিল্পীদের একক ও দ্বৈত গানের পরিবেশনায় অংশ নেন: সৈয়দ মাসুদুল ইসলাম টুটুল, মিতা হোসেন, ফারহানা তুলি, মোহাম্মদ শানু, বুলা আফরোজ, নজরুল ইসলাম, রেজা কামাল ও ইরামনি দেবী। সমাপনী বক্তব্যে সকলে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঊনবাঙালের উপদেষ্টা ও বইমেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক ফখরুল আলম।