সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১ ১৪৩২   ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ফুটবল বিশ্বকাপে লাখো দর্শকের ভিসা অনিশ্চিত

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৫২ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার


 
ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞায় ভিসা পচ্ছেন না ফুটবল প্রেমিকরা। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের খেলা দেখার অপেক্ষায়।  কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অভিবাসন নীতি ও নিষেধাজ্ঞায় তা ভেস্তে যাচ্ছে।  যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর যৌথ আয়োজনে হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপ। কিন্তু আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহু দেশের সমর্থকদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বকাপ সাধারণত আয়োজক দেশের সংস্কৃতি, আতিথেয়তা ও বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব প্রদর্শনের সুযোগ। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের ১৯টি দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং অভিবাসন তৎপরতা জোরদারের কারণে সেই বার্তা উল্টো হচ্ছে । বিশ্ব যখন টুর্নামেন্টের দিকে তাকিয়ে থাকবে, যুক্তরাষ্ট্র তখন নিজেকে বিশ্ব থেকে আরো আলাদা করে তুলছে। ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিটের দাম রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছায় অনেক সমর্থক আগেই নিরুৎসাহিত হয়েছেন। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা সীমাবদ্ধতা ফুটবলপ্রেমীদের সামনে নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে যে তারা কি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে নিজেদের দলকে সমর্থন করতে পারবেন। নাকি নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতির কারণে ঝুঁকিতে পড়বেন?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন, যাতে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বেশিরভাগসহ ১৯ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ বা সীমিত করা হয়। এসব দেশের সমর্থকেরা ২০২৬ বিশ্বকাপের যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ম্যাচেই উপস্থিত থাকতে পারবেন না। ি
সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত ১২ দেশ-আফগানিস্তান, চাদ, কঙ্গো রিপাবলিক, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত ৭ দেশ : বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। একই সঙ্গে আরো ৩৬টি দেশকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করার বিষয়টিও প্রশাসন বিবেচনা করছে। এর সিদ্ধান্ত হবে ৬০ দিনের পর্যালোচনা শেষে। এই তালিকার মধ্যে রয়েছে ঘানা, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, কেপ ভার্দে ও মিশরের মতো বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা আফ্রিকার পাঁচ দেশ। এমন পরিস্থিতি বিশ্বকাপকে ঘিরে আফ্রিকান ফুটবল কমিউনিটির মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে।

২০২৬ বিশ্বকাপের ১০৪টি ম্যাচের মধ্যে ৭৮টিই যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালসহ সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচগুলোর স্থানও যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলো। ফলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যত পুরো ফুটবল উৎসব থেকে বহু দেশের সমর্থকদের বাদ দিয়ে দিচ্ছে। হাইতি ও ইরান এই দুটি দেশই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এবং পাশাপাশি ২০২৬ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। হাইতি ৫০ বছরের বেশি সময় পর বিশ্বকাপে জায়গা পেলেও তাদের বেশিরভাগ সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। এর ওপর ট্রাম্প প্রশাসন হাইতিয়ানদের জন্য দেওয়া টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস বাতিল করেছে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ৩ লাখ ৪০ হাজার হাইতির নাগরিক ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৈধ মর্যাদা হারাবেন। ফলে অনেকের জন্য স্টেডিয়ামে গিয়ে ম্যাচ দেখা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। ইরান : যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভিসা প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ তুলে ইরান বিশ্বকাপ ড্র-এ অংশগ্রহণই করেনি। এছাড়া সিয়েরা লিওন, কঙ্গো ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক, ক্যামেরুনসহ বহু ফুটবলপ্রেমী দেশ থেকেও সমর্থকরা ম্যাচ দেখার সুযোগ হারাতে পারেন।