বৃহস্পতিবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩২   ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

বেরিয়ে এলো রহস্যময় সুড়ঙ্গ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:১১ এএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো বাড়ি। ১৭৩৪ সালে বাড়িটি ছিল প্রাচীন দীঘাপতিয়ার রাজবংশের এস্টেটের সম্পত্তি। রাজশাহী নগরীর সিপাইপাড়া এলাকায় অবস্থিত এ বাড়িটি ভাষাসৈনিক মনোয়ারা রহমানের নামে এতদিন ইজারায় ছিল। সম্প্রতি ইজারা বাতিল করে বাড়িটি অপসারণের জন্য নিলামে বিক্রি করেছে বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিস। মঙ্গলবার ক্রেতা সেই বাড়ি ভাঙতে শুরু করলে বেরিয়ে আসে রহস্যময় একাধিক সুড়ঙ্গ। যা নিয়ে রীতিমত হইচই পড়ে গেছে চারদিকে। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল সরেজমিন বাড়ি ও সুড়ঙ্গটি দেখতে যান বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের একটি প্রতিনিধিদল। ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ জায়গার মালিক ছিলেন সন্দীপ কুমার রায়। তার বাবা রাজা হেমেন্দ্র নারায়ণ রায়। ভূমি অফিসে কাগজপত্রে জমির মালিকের ঠিকানা লেখা আছে দীঘাপতিয়া এস্টেট, বলিহার, নাটোর। রাজা হেমেন্দ্র রায় ছিলেন দীঘাপতিয়ার রাজবংশের রাজা প্রমথনাথের চার ছেলের একজন। নথিপত্রে দেখা গেছে, ১৯৭২ সালের আরএস রেকর্ডে এ সম্পত্তির মালিক হিসেবে সন্দীপেরই নাম আছে। ১৯৮১ সালে এ সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি (ভিপি) ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৪ সালের পর আর কোনো সম্পত্তি ভিপি ঘোষণা করা যাবে না বলে আদেশ জারি করেছিল। যাই হোক, ইজারা মূলে

 

মঙ্গলবার শুরু হয় বাড়ি ভাঙার কাজ। কাজটি তদারকি করছিলেন নিলামে ভবন কেনা ব্যক্তির ব্যবস্থাপক মো. অপু। তিনি বললেন, ‘এ সুড়ঙ্গ প্রাকৃতিক এসি। আগেকার দিনে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা তাদের ঘরের নিচে এ রকম সুড়ঙ্গ রাখতেন। তাতে পানি জমে থাকত। ঘর ঠান্ডা থাকত।’

 

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, ৭-৮ জন শ্রমিক বাড়িটি ভাঙার কাজ করছেন। ইতোমধ্যে বাড়ির সিংহভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। সামনের দিকের দুটি ঘরের মেঝের নিচে আছে কয়েকটি সুড়ঙ্গ।

 

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার খন্দকার শামসুল আরেফিন জানান, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অনুমান করছেন, এটি ব্রিটিশ আমলের তৈরি। ঘর ঠান্ডা রাখতে এই কৌশলে সুড়ঙ্গ করে পানি জমা রাখা হতো। তার পরও এর প্রত্নতাত্বিক গুরুত্ব আছে কি না, সেটি দেখতে তারা গবেষণা করবেন। কিছু নমুনা তারা সংগ্রহ করেছেন।

 

এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আ ন ম বজলুর রশীদ বলেন, ‘বাড়িটির ব্যাপারে আমার ধারণা ছিল না। বোয়ালিয়া থানার এসি ল্যান্ড ও সিটি করপোরেশনকে বলছি, বিষয়টি দেখার জন্য।’