মার্কিন এফ-৩৫ পেতে সৌদির ওপর ইসরায়েল নিয়ে কঠিন শর্ত
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:১৭ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০২৫ সোমবার
মার্কিন এফ-৩৫ পেতে যাচ্ছে সৌদি। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক এ বিমান পেতে চাইলে কোনো আপত্তি করেনি ইসরায়েল। তবে সৌদিকে কঠোর শর্তের বেড়াজালে আনতে চায় তারা। এটি বিক্রি করতে যুক্তরাষ্ট্রকে শর্ত দিচ্ছে ইসরায়েল।
রোববার (১৬ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করলে তাদের আপত্তি নেই। তবে এক্ষেত্রে শর্তারোপ করেছে তারা। বলা হয়েছে, রিয়াদকে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হবে। ইসরায়েলের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে অ্যাক্সিওস।
এক্সিওস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। বৈঠকে সম্ভাব্য এফ-৩৫ চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি নিরাপত্তা সমঝোতা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে।
অ্যাক্সিওসের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে এমবিএসের সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প বলেন, গাজা যুদ্ধ শেষ হওয়ায় এখন সৌদি আরবের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোনোর সময় এসেছে।
গত শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করেন সৌদি আরব শিগগিরই আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে। তিনি এও নিশ্চিত করেন, সৌদি আরবের সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ সম্ভাব্য অস্ত্রচুক্তি বিবেচনা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক করলে তবেই তাদের এফ-৩৫ দেওয়া যুক্তিসঙ্গত। কোনো কূটনৈতিক প্রতিদান না নিয়ে শুধু অস্ত্র দেওয়াটা ভুল হবে।
এক্সিওস জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে একমাত্র ইসরায়েলের কাছেই এফ-৩৫ রয়েছে। সৌদি আরব ওই যুদ্ধবিমান পেলে আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্য বদলে যেতে পারে এবং ইসরায়েলের ‘কোয়ালিটেটিভ মিলিটারি এজ’ বা সামরিক প্রাধান্য প্রশ্নে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির সময় ইসরায়েল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে এফ-৩৫ সরবরাহে সম্মতি দিলেও সেই চুক্তি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরবকে এফ-৩৫ দেওয়া হলে তারা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইবে। কেননা সৌদি আরব ভৌগোলিকভাবে ইসরায়েলের খুব কাছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরব থেকে ইসরায়েলে এফ-৩৫ পৌঁছাতে মাত্র কয়েক মিনিট লাগে। তাই ইসরায়েল চাইবে এফ-৩৫গুলি সৌদির পশ্চিমাঞ্চলীয় ঘাঁটিতে মোতায়েন না করা হোক।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প-এমবিএস বৈঠকে এই বিষয়ে অগ্রগতি আশা করা হচ্ছে। তবে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের শর্তের মধ্যে এখনও বড় ফারাক রয়েছে। ইসরায়েলি দুই কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, তারা আশা করছেন ট্রাম্প এমবিএসকে শর্ত শিথিল করতে রাজি করাবেন এবং আলোচনা তিন দেশের মধ্যে সরাসরি নতুন শান্তিচুক্তির পথে অগ্রসর হবে।
