রোববার   ০২ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ১৮ ১৪৩২   ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

‘খাবার নেই, পানি নেই’—ঘূর্ণিঝড় মেলিসার পর জ্যামাইকায় হাহাকার

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১১:৫৭ পিএম, ১ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার

ঘূর্ণিঝড় মেলিসার আঘাতে বিপর্যস্ত ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকা। দক্ষিণ উপকূলের বন্দরনগর ব্ল্যাক রিভার এখন পুরোপুরি ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে। শক্তিশালী ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার কয়েক দিন পরও সেখানে খাবার, পানি ও বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। সাহায্য না পৌঁছানোয় সেখানকার বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা ও ক্ষোভ।

 

স্থানীয় বাসিন্দা জিমি এসন বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের কোনো খাবার নেই, আমাদের খাবার দরকার।’ তিনি বলেন, আমার বাড়িঘর, দোকান- সবই ঝড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

এদিকে ‍পুরো শহরের রাস্তাজুড়ে এখন ক্ষতচিহ্ন, কোথাও উল্টে থাকা নৌকা, ভাঙা বাড়িঘর আর কাদামাটি। মানুষ খাদ্য ও পানি খুঁজে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত দোকান থেকে যা পাচ্ছে তাই তুলে নিচ্ছে।

 

ডেমার ওয়াকার নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা যা পাই তাই খাই। দোকান থেকে খাবার আর পানি বের করে অন্যদেরও দিচ্ছি। এখন সবাই বাঁচার চেষ্টা করছে।’

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্ল্যাক রিভারে এখন কোনো ত্রাণ ট্রাক পৌঁছায়নি। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন, যোগাযোগব্যবস্থাও অচল। স্থানীয় মেয়র রিচার্ড সলোমন জানিয়েছেন, শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এমনকি হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন ও ফায়ার স্টেশনও ক্ষতিগ্রস্ত।

 

মেয়র সলোমন বলেন, ‘মানুষের এই লুটপাট আমরা সমর্থন করি না, কিন্তু তাদের ক্ষুধা ও হতাশা বোঝা যায়। কেউ ধ্বংসস্তূপ থেকে খাবার তুলছে, কেউ দোকানের ভেতরে ঢুকছে।’

 

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জ্যামাইকার বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশী হাইটিতে মারা গেছে ৩০ জন। অনেক পরিবার এখনো নিখোঁজ সদস্যদের খুঁজে পাচ্ছে না, কারণ ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ।

 

এদিকে রাজধানী কিংস্টনে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে শুরু করেছে, তবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে রাস্তা ভাঙা ও জলাবদ্ধতার কারণে। শুক্রবার বিকেলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও ত্রাণকর্মীরা ব্ল্যাক রিভারে পৌঁছেছে।

 

স্থানীয় বাসিন্দা শন মরিস বলেন, ‘এটা টাকার ব্যাপার নয়। আমাদের খাবার আর পানির দরকার। আমরা শুধু বাঁচতে চাই।’ সূত্র: বিবিসি