রাজকীয় উপাধি ‘ডিউক অব ইয়র্ক’ ত্যাগ করলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৪০ এএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ রোববার

বিতর্কিত মার্কিন ব্যবসায়ী জেফরি এপস্টিন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানো এবং নিজের আচরণ নিয়ে দীর্ঘদিনের সমালোচনার মুখে অবশেষে ব্রিটেনের প্রিন্স অ্যান্ড্রু ঘোষণা দিয়েছেন—তিনি আর ‘ডিউক অব ইয়র্ক’ উপাধি ব্যবহার করবেন না। শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
রাজা তৃতীয় চার্লসের ছোট ভাই ও প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পুত্র প্রিন্স অ্যান্ড্রু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। বিশেষ করে এপস্টিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রকাশ পাওয়ার পর।
যুক্তরাষ্ট্রে এপস্টিনের বিরুদ্ধে একাধিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এবং তার মৃত্যুর পর অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ সামনে আসে।
এর আগেও অ্যান্ড্রুকে নিয়ে বিতর্ক থামেনি। গত বছর এক আদালতের নথিতে প্রকাশ পায়, তার এক ঘনিষ্ঠ ব্যাবসায়িক সহযোগীকে ব্রিটিশ সরকার সন্দেহ করেছিল চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে। যদিও অ্যান্ড্রু দাবি করেছিলেন, সেই ব্যক্তির সঙ্গে তার যোগাযোগ অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে।
শুক্রবার প্রকাশিত বিবৃতিতে অ্যান্ড্রু বলেন, ‘আমাকে ঘিরে চলমান বিতর্ক আমার বড় ভাই রাজা চার্লস এবং রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। তাই, সব সময় যেভাবে পরিবার ও দেশের প্রতি কর্তব্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছি, এবারও তা-ই করছি।’
তিনি আরো যোগ করেন, ‘এ কারণে আমি আমার রাজকীয় উপাধি ও সম্মানসূচক মর্যাদা আর ব্যবহার করব না। তবে আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আমি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছি।
’ ব্রিটিশ রাজপরিবারের সূত্র জানিয়েছে, অ্যান্ড্রু এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং রাজা চার্লসও এ সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন।
৬৫ বছর বয়সী প্রিন্স অ্যান্ড্রু বর্তমানে ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারের তালিকায় অষ্টম স্থানে আছেন। একসময় তিনি ছিলেন ব্রিটিশ নৌবাহিনীর একজন সাহসী কর্মকর্তা এবং ১৯৮০-এর দশকে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ফকল্যান্ডস যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তবে ২০১১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূতের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। ২০১৯ সালে সব ধরনের রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন।
২০২২ সালে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর তার সামরিক পদবি ও রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতাও বাতিল করা হয়। যদিও তিনি এসব অভিযোগ সব সময়ই অস্বীকার করে আসছেন।
সেই বছরই অ্যান্ড্রু যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা ভার্জিনিয়া জিউফ্রের মামলার নিষ্পত্তি করেন। জিউফ্রে দাবি করেছিলেন, কিশোরী অবস্থায় অ্যান্ড্রু তাকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জিউফ্রের আত্মজীবনী প্রকাশের পর বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে। গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রকাশিত অংশে জিউফ্রে লিখেছেন, রাজপরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে অ্যান্ড্রু মনে করতেন তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন যেন তার ‘জন্মগত অধিকার।’
সূত্র : রয়টার্স