শনিবার   ০৪ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ১৮ ১৪৩২   ১১ রবিউস সানি ১৪৪৭

ইউনূসের খোয়াব ও ফখরুলের আয়না দর্শন

মনোয়ারুল ইসলাম

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:২৭ এএম, ৪ অক্টোবর ২০২৫ শনিবার


 

নোবেল লরিয়েট ড.ইউনূসের ফাঁদে ফখরুলরা। জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান রুখতে রয়েছে দীর্ঘ পরিকল্পনা। ১৭টি বছর গুম, নির্যাতন, হত্যা, হামলা ও মামলা নিয়ে এই শক্তিটি টিকে ছিল। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শতভাগ সর্মথন দিয়ে জুলাই বিপ্লবকে সফলতায় পৌঁছে দিয়েছে। কে নেতৃত্ব দিচ্ছে এই বিপ্লবে তা মুখ্য ছিল না। হাসিনার পতনই ছিল বিএনপি সহ সকল দল ও মতের প্রত্যাশা। কোটি জনতা সেদিন হাসনাত, সারজিস, আসিফ ও নাহিদদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এই কয়েকজন তরুণকে গোটা জাতি সর্মথন দিয়েছিল। যার মুল কারন ছিল ফ্যাসিবাদ শাসনের অবসান ঘটানো। বিপ্লবত্তোর সময়ে যে যার অবস্থানে ফিরে গেছেন। ছাত্ররা পড়ার টেবিলে ফিরে যাবেন এটাই ছিল স্বাভাবিকতা। দীর্ঘ ১৭ বছরের ভোটারবিহীন রাজনীতির অবসানের মধ্যদিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সূচনা হবে। গনতন্ত্র প্রিয় মানুষ উৎসবের আমেজে ভোট দেবেন। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় জনপ্রতিনিধিত্বশীল একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু দেশটি সে পথে হাঁটেনি। সংস্কার নামক একটি ‘মূলা’ ঝুলিয়ে জন প্রতাশার কবর রচিত হলো। বিভাজিত হলো জুলাই আন্দোলনের চেতনা। পড়ুয়া ছেলেগুলো ক্ষমতার চোরাবালিতে স্বপ্নবিলাসে ভেসে বেড়ালেন। ১৮ কোটি মানুষের অংহকারের নায়কেরা ছিটকে পড়লেন। তারা ভুলে গেলেন জনতা তাদের সর্মথন দিয়েছিল ফ্যাসিবাদের পতনের আন্দোলনে। মা তার শিশুর হাত ধরে রাস্তায় এসেছিল একটি গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখার জন্য। বিভাজিত রাজনৈতিক মব, চাঁদাবাজি ও উগ্রবাদের নাচ দেখবার জন্য নয়।  বিপ্লবের পর জনতা যার যার অবস্থানে ফিরে গেছেন। আর আমাদের নায়কেরা বিভ্রান্তের গলিতে আটকে গেলেন। যাদের থাকার কথা ছিল জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান হয়ে। তারা হয়ে গেলেন নিঃসঙ্গ পথহারা যাযাবর।  ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’ ফ্যাসিবাদের পতনে দাওয়াই হলেও ক্ষমতার বলয়ে ছাত্রদের স্বপ্নবিলাসে তা কাজ করছে না। যার কারনে তারা ভোটবিহীন অনির্বাচিত সরকারের ষড়যন্ত্রে গা ভাসালেন। কিন্তু রিয়ালিটি বড়ই নিমর্ম। 
ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনে যোগ দিবেন তা ৩ মাস আগেই নিশ্চিত। ডেলিগেটস তালিকাও চূড়ান্ত। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও পতিত সরকারের সহযোগিরা ঘোষণা করলেন ভয়ংকররপে ইউনূস ও তার সঙ্গীদের রুখে দেয়ার। পাচারকৃত মিলিয়ন ডলার  এলো তাদের হাতে। সবখানে ইউনূসদের ঘেরাও করা হবে। আঘাত হানা হবে। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াত সর্মথকরা ইউনূসের এই সফর নিয়ে ছিলেন রিলাক্টটেন্ট। তাদের একাধিক নেতা প্রতিবেদকের সাথে আলাপে বলেছিলেন, ইউনূসের সফরের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। গায়ে পড়ে আওয়ামী লীগের সাথে আমরা ঝগড়ায় জড়াবো না। কেন্দ্র থেকেও ইউনুসকে স্বাগত জানানোর কোন নির্দেশনাও নেই। সরকার ও স্থায়ী মিশনে কর্মরতরা সম্ভাব্য শংকার বিয়য়টি আচঁ করতে পারেন। আওয়ামী লীগের ভয়ংকর পরিকল্পনার কাথা জানানো হয় ঢাকায়।  ফেস সেভিংসে মরিয়া ইউনূসের পারিষদবর্গ। আবারাও মিটিকুলাস ডিজাইন। বিএনপি ও জামায়াতকে নিউইয়র্কে জড়িত করা ফাঁদ। তাদের দিয়েই আযায়ামী লীগকে ঠেকাতে হবে। নইলে ইউনূসের সন্মান রক্ষা হবে না। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের ড, ইউনুসের সফরসঙ্গী করতে হবে। তা হলেই তারা মাঠে নামবে। অনুরোধ গেল লন্ডনে তারেক রহমানের কাছে। সাড়াও মিললো। ইউনূস ট্র্যাপে পা দিলো ফকরুলরা।  যা হবার তা ঘটেছে। এনসিপির আখতার ডি থেরাপী খেলেন, ফকরুলকে অপমান করা হলো। ডা. সারা হলেন লাঞ্চিত। 
জাতিসংঘ অধিবেশনে এসে ড. ইউনূসের অর্জন কি? ক্ষুদ্র জ্ঞানীরা বলবেন, অশ্ব ডিম নয়। অর্জন ডিম থেরাপী। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মারামারি। প্রবাসে বাংলাদেশের কথিত নোংরা রাজনীতির উলঙ্গ নৃত্য। কমিউনিটির মাথা হেট হওয়ার মতো নানা অবাঞ্চিত ঘটনা। কমিউনিটির সতির্থদের একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা। নোংরা ভাষার ভাইরাল। ইত্যাদি।
২৭ নভেম্বর ম্যারিয়ট মারকুইস হোটেলে ড. ইউনূস স্বপ্নে গল্প শোনালেন। জানালেন, কেউ কেউ তাকে ৫,১০,৫০ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান। সেটা কি যুক্তরাষ্ট্র নাকি বাংলার জনগন? তা পরিষ্কার অবশ্য করেন নি। আর বিএনপির মহাসচিব ফকরুল আলম প্রধান উপদেষ্টাকে সামনে রেখে বলেন, আমি ড. ইউনূসের মধ্যে জিয়াউর রহমানকে খুঁজে পাই। কি দেউলিয়াপনা আর কি। যদি তাই হয়, তবেতো নির্বাচন নয়। আসুন ৮৩+৫+১০+৫০=১৪৮ বছর স্যারকে ক্ষমতায় রাখি।