শনিবার   ০৪ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ১৮ ১৪৩২   ১১ রবিউস সানি ১৪৪৭

সম্ভাব্য মার্কিন হামলায় ভেনেজুয়েলায় জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তুতি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:২১ এএম, ১ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক আগ্রাসন ঠেকাতে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে প্রস্তুত। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু হলো। যদি মার্কিন সাম্রাজ্য ভেনেজুয়েলায় সামরিক আক্রমণ চালায়, তবে আমাদের জনগণ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে।’

 

এর আগে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ বিদেশি কূটনীতিকদের জানান, মাদুরো ইতিমধ্যে একটি ডিক্রিতে সই করেছেন, যা তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করছে। এর মাধ্যমে দেশের পুরো সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট এবং সামরিক বাহিনীকে জনসেবা খাত ও তেলশিল্প নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও দেওয়া হবে। ডিক্রির মেয়াদ হবে ৯০ দিন, প্রয়োজনে আরও ৯০ দিন বাড়ানো যাবে।

 

এই সিদ্ধান্ত এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ নৌ বহর মোতায়েনের প্রেক্ষাপটে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮টি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন ও এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার ক্যারিবীয় সাগরে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া পুয়ের্তো রিকোতেও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই অভিযান মাদক পাচার ঠেকানোর জন্য। তবে জাতিসংঘ ও মার্কিন তথ্য বলছে, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন সরবরাহের বড় উৎস নয়।

 

মার্কিন বাহিনী সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় আন্তর্জাতিক জলসীমায় অন্তত তিনটি ছোট নৌকা বোমা হামলায় ধ্বংস করেছে। তারা দাবি করেছে, এগুলো মাদক পরিবহনে জড়িত ছিল। এসব হামলায় অন্তত ১৭ ভেনেজুয়েলান নিহত হয়েছেন। এর জবাবে কারাকাস বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে।

 

এদিকে মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার মূল ভূখণ্ডেও বিমান হামলার পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন। কথিত মাদক চক্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে এই হামলা চালানো হতে পারে। তবে মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তাঁর দেশ শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায়। তিনি আরও দাবি করেন, নৌকা ধ্বংস করতে চালানো মার্কিন হামলা আসলে আদালতের বাইরে হত্যার শামিল।

 

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভেনেজুয়েলা যদি যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অভিবাসীদের ফিরিয়ে না নেয়, তবে দেশটিকে অনেক মূল্য দিতে হবে। তবে মাদুরোর মতে, যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে ভেনেজুয়েলাকে চাপে ফেলছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, দুই দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে শান্তিপূর্ণ হতে পারে।