মঙ্গলবার   ২৮ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ১২ ১৪৩২   ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ঢাকা ও নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে মতবিনিময় অনুষ্ঠান

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:০১ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শনিবার

 

 
জাতিসংঘের ৮০ তম সাধারণ অধিবেশন কাভার করতে নিউইয়র্কে আসা বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় সভার আয়োজক করেছে নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। গত ২৪ সেপ্টেম্বর জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে আয়োাজিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম মজুমদার।
বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আজকাল সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, মূলধারার রাজনৈতিক এটর্নি মঈন চৌধুরী, নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলী ডিস্ট্রিক্ট ৩৬- এর আগামী নির্বাচনে প্রার্থী মেরি জোবায়দা প্রমুখ।
নিউইয়র্ক ও বাংলাদেশের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার অর্ধশতাধিক সাংবাদিক এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা ছিলেন ঢাকা থেকে আসা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমীন রোকন, গাজী টিভির বার্তা প্রধান গাউসুল আজম বিপু, দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার ও ডিইউজে নেতা আবুল কালাম, চ্যানেল ওয়ান-এর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, নিউজ ২৪-এর এম মোশাররফ হোসাইন, বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর সাখাওয়াত কাওসার, জিটিভি’র মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসাইন, দৈনিক যুগান্তরের মুজিব মাসুদ, দৈনিক জনকন্ঠের মীর মোহাম্মদ জসিম, বাংলা এডিশন-এর মোহাম্মদ শিমুল ইসলাম,  রূপালী বাংলাদেশ-এর শাওন সোলায়মান ও দীন ইসলাম, দৈনিক পূর্বাঞ্চল ও স্টার নিইজ-এর খুলনা বরো চীফ রফিউল ইসলাম টুটুল সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিকরা সব সময় অবহেলিত নির্যাতিত। পত্রিকা-টিভিসহ বাংলাদেশের হাতে গোনা ১০-১২ টি গণমাধ্যম ছাড়া অধিকাংশ গণমাধ্যমেই সাংবাদিকরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পান না। যারা নিয়মিত বেতন পান এবং যে বেতন পান তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। কিন্তু দেশির সব কিছুর জন্য সাংবাদিকদেরই দোষ দেয়া হয়। অথচ তাদের সুযোগ সুবিধার কথা কোন সরকারই বলে না। নিজেদের নাম কামানোর জন্য যেমন তেমন ভাবে পত্রিকা চলছে, তা দেখার জন্যও কেউ নেই। যে পত্রিকা ২ হাজার কপি ছাপে না তারা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২লাখ কপি ছাপানোর পত্র যোগাড় করে। এমন চলতে দেওয়া যায় নাা।
তারা বলেন, শুধু বাংলাদেশই নয়, নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও কোন সাংবাদিক শুধু সাংবাদিকতা করে জীবন নির্বাহ করতে পারে না। তাদের উপর সবার প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু তারা কিভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে কেউ ভাবে না।
মতবিনিময় সভার এক পর্যায়ে তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। সভায় ঢাকার সাবেক সাংবাদিক সুলতানা রহমানের বক্তব্য প্রদানকালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন উপস্থিত অনেকেই।  এসময় তার সাথে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠতা ও আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত করে সাংবাদিকতার অভিযোগে ঢাকার বেশ কয়েকজন সাংবাদিককের তোপের মুখে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে সভায় তর্ক-বিতর্ক ও হৈচৈ শুরু হয়, যা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে। পরে তিনি বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকেন।
সুলতানা রহমান নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দাবি করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করার জন্য কেউ যদি আমাকে ফ্যাসিস্ট বলে বলুক। আমি প্রাউড করি ফ্যাসিস্ট হতে পেরে। হেনস্তার ঘটনায় সুলতানা রহমান বলেন আমার উপর মৌখিক মব সৃষ্টি করা হয়েছে। বক্তব্যে সুলতানা রহমান দাবি করেন যারা বিগত সরকাররের কাছ থেকে কোন ‘কিছু’ পাওয়া আশা করেছিলেন তারাই সমস্যায় পড়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে দেশে অনেক সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলার হয়েছে।
তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন ঢাকা ও নিউইয়র্কের সাংবাদিকরা। তারা বলেন, সুলতানা ফ্যাসিস্টের দোষর ছিলেন তাই তার কোন সমস্যা হয়নি। তিনি শেখ হাসিনার এক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারির ঘনিষ্ট ছিলেন, তিনিতো ভালো থাকবেনই। সাগর-রুনিসহ আরো সাংবাদিক হত্যা নিয়ে তিনি নির্বকার। তিনি তার সমমনা ফ্যাসিষ্টের দোষরদের জন্য চিন্তিত। জুলাই-আগষ্টের আন্দোলন কালে হাজার-হাজার ছাত্র-জনতার খূনের সময়ও যেসব সাংবাদিক শেখ হাসিনার এ ঘৃণ্য কাজের প্রশংসা করেছেন, এবং তা চালিয়ে যাবার উৎসাহ দিয়েছেন, তার সঙ্গে আছেন বলে খুনের সহায়তা করেছেন তাদের নামেই মামলা হয়েছে। কোনা সৎ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকের নামে মামলা হয়নি।