সোমবার   ২০ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ৫ ১৪৩২   ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

মার্কিন ভিসা না পেয়ে ভিডিও ভাষণে যা বললেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৫৪ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাস বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না এবং তিনি ইহুদিবিদ্বেষের নিন্দা করেন, একইসঙ্গে ইসরায়েলের দখল প্রসারের হুমকির মুখে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থনের আহ্বান জানান।

 

ফ্রান্স নেতৃত্বে একটি বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কয়েকদিন পর এবং কয়েকটি পশ্চিমা শক্তি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষাপটে, ৮৯ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ নেতা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রত্যাখ্যানের কারণে নিউইয়র্কে সরাসরি উপস্থিত হতে না পেরে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন।

 

আব্বাস তার বক্তব্যে সংযত সুরে কথা বলেন এবং সরাসরি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান উদ্বেগগুলোতে সাড়া দেন—বিশেষত গাজাভিত্তিক হামাস, যা তার ফাতাহ আন্দোলনের প্রতিদ্বন্দ্বী।

 

তিনি বলেন, ‘হামাস শাসন ব্যবস্থায় কোনো ভূমিকা পালন করবে না।

হামাস এবং অন্য গোষ্ঠীগুলোকে তাদের অস্ত্র ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে সমর্পণ করতে হবে।’ ভিডিও বার্তায় দেওয়া এ বক্তব্যে উপস্থিত প্রতিনিধিরা করতালি দেন।

 

আব্বাস নিজেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা থেকে আলাদা করেন—যা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এ ছাড়া ফিলিস্তিনিরা ইহুদিদের অধিকার অস্বীকার করছে ইসরায়েলের সমর্থকদের এমন অভিযোগ নাকচ করেন তিনি।

 

তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণ যা ভোগ করেছে তার পরও আমরা ৭ অক্টোবর হামাসের কর্মকাণ্ড প্রত্যাখ্যান করি—যেসব কর্মকাণ্ড ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে এবং জিম্মি করেছে। কারণ এই কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনি জনগণকে কিংবা তাদের ন্যায়সংগত স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামকে প্রতিনিধিত্ব করে না।’

 

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি গাজার জন্য জাতিসংঘ সমর্থিত শান্তি পরিকল্পনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সৌদি আরব, ফ্রান্স এবং জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ করবেন, যা সাধারণ পরিষদে বিপুল সমর্থন পেয়েছে।

 

তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনি ইস্যুর প্রতি সংহতি ও ইহুদিবিদ্বেষকে গুলিয়ে ফেলার চেষ্টা প্রত্যাখ্যান করি—যা আমরা আমাদের মূল্যবোধ ও নীতির ভিত্তিতে প্রত্যাখ্যান করি।

 

আব্বাস প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলের গাজায় সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, এটি ২০ এবং ২১ শতকের মানবিক ট্র্যাজেডির অন্যতম ভয়াবহ অধ্যায়—যা ইঙ্গিতপূর্ণভাবে হলোকাস্টের সঙ্গে তুলনা করে।

 

তিনি গাজার জন্য একটি অন্তর্বর্তী কমিটির আহ্বান জানান, যার নেতৃত্বে থাকবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। হামাস ২০০৭ সাল থেকে এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করেছি এবং নিশ্চিত করতে থাকব যে, গাজা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমরা সেখানে শাসন ও নিরাপত্তার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। হামাস শাসনে কোনো ভূমিকা রাখবে না এবং তারা ও অন্য গোষ্ঠীগুলো তাদের অস্ত্র ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষকে সমর্পণ করবে।

আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি, আমরা একটি সশস্ত্র রাষ্ট্র চাই না।’

 

তার উত্থাপিত বিষয়গুলো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অনুমোদিত ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে