এবার ফ্রান্সে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে তরুণদের সংঘর্ষ
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ১২:৪৮ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ফ্রান্সে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ তীব্র হয়েছে। বুধবার দেশটির রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন স্থানে ‘ব্লোকঁ তু’ কর্মসূচি পালন করেছেন হাজারো তরুণ। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার বিক্ষোভ শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পুলিশ অন্তত ২০০ জনকে আটক করে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম লো মঁদ। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, এ সংখ্যা অন্তত ৩০০ জন।
ফরাসি ভাষায় ‘ব্লোকঁ তু’ অর্থ সবকিছু অচল বা বন্ধ করে দেওয়া। এএফপি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর ব্যয় সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ শুরু করেছে বামপন্থীরা। গত সোমবার পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া বায়রু। এরপরই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেবাস্টিয়ান লোকনুর নাম ঘোষণা করেন মাখোঁ। বুধবার তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। ঠিক এদিনই বিক্ষোভ শুরু হলো।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, মাখোঁর উচিত ছিল সংসদ ভেঙে দেওয়া। অথবা একজন বামপন্থী নেতাকে প্রধানমন্ত্রী করা। কিন্তু তিনি তাঁরই এক ঘনিষ্ঠজনকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। এটি হতাশাজনক।

আগুন ধরানোর জন্য সড়কে ডাস্টবিন জড়ো করছেন কয়েক বিক্ষোভকারী। বুধবার প্যারিসে। ছবি: এএফপি
দেশটির গণমাধ্যম লো মঁদ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার হাজারো বিক্ষোভকারী রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করেন। তারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দমনে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভ দমনে ৮০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ নিক্ষেপ করে ধোঁয়ার গ্রেনেড। পরে সেটি সংগ্রহ করে পুলিশের দিকে ছোড়েন এক বিক্ষোভকারী। ছবি: এএফপি
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো বলেছেন, সারাদেশে পরিকল্পিতভাবে এমন বিক্ষোভ করা হচ্ছে। বুধবার বিক্ষোভ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনে-তে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি রেললাইনে বিদ্যুৎ লাইনের ক্ষতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রুনোর অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে একটি বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।

দক্ষিণ ফ্রান্সে বিক্ষোভকারীদের প্রতিহতের চেষ্টায় পুলিশ। ছবি: এএফপি
লো মঁদ বলছে, কোনো সুনির্দিষ্ট নেতৃত্ব ছাড়াই এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা মাখোঁ প্রশাসনের বাজেটে ব্যয় সংকোচনের বিরোধীতা করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতের বৈষম্যেরও বিরোধীতা করছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেতাইয়ো বলেন, মূলত অনলাইনে সরকারবিরোধীরা সংঘবদ্ধ হন। কিছু বামপন্থী রাজনীতিবিদ তাদের সমর্থন দিচ্ছেন। তারা ফ্রান্সে একটি বিদ্রোহের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। বুধবার কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর মানসিকতা নিয়েই রাস্তায় নেমেছে।