মার্কিন শুল্ক চাপের মধ্যেই ভারতকে তেলে ৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে রাশিয়া
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৪৫ এএম, ২১ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার

যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভারতকে অপরিশোধিত তেলে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার উপবাণিজ্য প্রতিনিধি এভজেনি গ্রিভা জানিয়েছেন, আলোচনার ভিত্তিতে এই ছাড় কার্যকর হবে এবং ভারত আগের মতোই রুশ তেল আমদানি চালিয়ে যাবে। খবর এনডিভির।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রিভা বলেন, "ছাড়ের বিষয়টি বাণিজ্যিকভাবে সংবেদনশীল। তবে সাধারণত ব্যবসায়িক আলোচনায় প্রায় ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। এটা কখনো কম-বেশি হতে পারে, তবে গড় হিসেবেই তা ৫ শতাংশের মতো।"
সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার উপমিশনপ্রধান রোমান বাবুশকিনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, "পরিস্থিতি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর আস্থা রাখি। বাইরের চাপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া জ্বালানি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।"
অন্যদিকে, রাশিয়ার তেল কেনার কারণে ভারতকে ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়নে সহযোগিতার অভিযোগে দোষারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, "ভারত রুশ তেলের বৈশ্বিক ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করছে, নিষিদ্ধ তেল রপ্তানি করে মস্কোকে ডলার সরবরাহ করছে।"
এই অভিযোগের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এতে ভারতের বস্ত্র, চামড়া ও সামুদ্রিক পণ্য খাতে বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারত এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগেই বলেছিলেন, অর্থনৈতিক চাপের মুখে ভারত কখনোই নতি স্বীকার করবে না।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে জানান, ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য হচ্ছে রাশিয়ার ওপর ‘পরোক্ষ চাপ’ সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি যুদ্ধ শেষ দেখতে চান। এজন্য তিনি ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।"
উল্লেখ্য, রাশিয়ার ওপর প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি যেসব দেশ মস্কো থেকে তেল কিনছে, তাদের ওপরও ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’ বা পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন ও ভারত বর্তমানে রুশ তেলের দুই বৃহত্তম ক্রেতা।