মঙ্গলবার   ১২ আগস্ট ২০২৫   শ্রাবণ ২৮ ১৪৩২   ১৭ সফর ১৪৪৭

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক, ইইউ নেতাদের সতর্কবার্তা

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৪৫ এএম, ১২ আগস্ট ২০২৫ মঙ্গলবার

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই দুই নেতার মধ্যে আসন্ন বৈঠককে কেন্দ্র করে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য সমাধান।

 

তবে ইউরোপের ছয়টি দেশের নেতা ও ইউরোপীয় কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, ইউক্রেনের অংশ নেওয়া ছাড়া যে কোনো শান্তি চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ছাড়া রাশিয়ার ওপর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা। খবর রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ানের

 

শনিবার রাতে ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় কমিশনের যৌথ এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আমরা অটল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, যুদ্ধের সমাপ্তি অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে। যাতে ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তার স্বার্থ নিশ্চিত হয়।

 

জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধের মাঝপথে ভূমি সমর্পণ করলে তা রুশ আগ্রাসনকে আরও উস্কে দিতে পারে। ট্রাম্প যদিও দাবি করেছেন, তিনি ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন এবং পুতিনের সঙ্গে একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছেন। তবে সেই সম্ভাব্য চুক্তিতে ‘অঞ্চল বিনিময়’ এর বিষয়টিও উঠে এসেছে– যা ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের জন্য উদ্বেগজনক।

 

শনিবার যুক্তরাজ্যের চেভেনিং হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রধান সহকারী আন্দ্রে ইয়ারমাক ফের জানান, যুদ্ধবিরতি জরুরি হলেও ফ্রন্টলাইন কোনো স্থায়ী সীমান্ত নয় এবং কিয়েভ কোনো ধরনের আঞ্চলিক ছাড় দেবে না।

 

বৈঠকে ইউরোপীয় পক্ষ থেকে পাল্টা প্রস্তাবও দেওয়া হয়, যাতে প্রথমে যুদ্ধবিরতি এর পর আলোচনার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া যে কোনো আঞ্চলিক বিনিময় অবশ্যই সমমাপের ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তাসহ হতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও স্পষ্ট করেছেন, ‘ইউক্রেন ছাড়া শান্তি আলোচনা সম্ভব নয়।’ মাখোঁ বলেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু ইউক্রেনের জনগণের, যারা গত তিন বছর ধরে স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে।

 

হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ার অনুরোধে আপাতত দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকের পরিকল্পনা হলেও, ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনেও রাজি ট্রাম্প। আলাস্কা বৈঠক হবে ২০২১ সালের জেনেভা সম্মেলনের পর প্রথমবার কোনো বর্তমান মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বৈঠক। আগের বৈঠকের ৯ মাস পর রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু করে।

 

বর্তমানে রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসনসহ ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়াও দাবি করছে। যদিও এ চারটি অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ এখনও রুশ বাহিনীর হাতে নেই। পূর্ব ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে এখন অগ্রসর হচ্ছে রুশ বাহিনী।