শনিবার   ০৯ আগস্ট ২০২৫   শ্রাবণ ২৫ ১৪৩২   ১৪ সফর ১৪৪৭

প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট

মাসুদ করিম, ঢাকা থেকে

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:০৬ এএম, ৯ আগস্ট ২০২৫ শনিবার

ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগেই ভোট ও নতুন সরকারের শপথ

 

ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগেই নির্বাচন -অর্ন্তবর্তি সরকারের এমন এক ঘোষণাতেই পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। গোটা দেশ এখন নির্বাচনমুখি। নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রমজানের আগে শুধু ভোট নয়, নতুন সরকারের শপথও হবে। এই লক্ষ্যে দুই মাস আগে ঘোষণা করা হবে নির্বাচনী তফসিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নড়েচড়ে বসেছে। ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠক হচ্ছে। গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানের এক বছর উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি যতবার ঘোষণা করেছেন সেগুলোতে এতটা স্পষ্ট দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তিনি একবার বলেছেন, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠকের পর ইউনূস বলেছেন, হয় ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে নির্বাচন হবে। কিন্তু এবার একেবারে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ফেব্রুয়ারিতে ভোটের ঘোষণা দিলেন।
ইউনূসের গত ৫ই আগস্টে দেওয়া ভাষণে নতুনত্ব ছিলো। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘এবার আমরা প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার আয়োজন নিশ্চিত করতে চাই। অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ যে আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে, এর বড় কারণ হলো রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান। নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে’। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার পর প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অনেকে জানতে চেয়েছেন যে, কীভাবে প্রবাসীরা ভোটার হবেন। কীভাবে ভোট দেয়া হবে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বলেছে যে, ডাকযোগে ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসীরা ভোট দেবেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কাজ এখনও চলছে। পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
প্রবাসীদের অনেকে এবার ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন। এবার বিএনপি’র মনোনয়ন পাওয়াটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি’র মনোনয়ন লাভের লক্ষ্যে প্রার্থীদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ প্রবল। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রবাসী অংশ নেবেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমান লন্ডন প্রবাসী হওয়ায় এই সব প্রবাসী প্রার্থীরা তোড়জোড় শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদেও মধ্যেও কেউ কেউ প্রার্থী হতে চাইছেন।
অর্ন্তবর্তি সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলেও দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। ফলে এই দল কোথাও নেই। ভোটে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ্রহণ হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে একতরফা নিবর্াাচনে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে এটা প্রায় নিশ্চিত। ইসলামী দলগুলো জোট বাঁধতে পারে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী, এবারের নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে জোট করা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকেও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এখন থেকে নির্বাচনই হবে মূল ফোকাস। সংস্কার ও বিচারও পাশাপাশি চলতে থাকবে। ইউনূসের লক্ষ্য, সর্বস্তরের ভোটারের উপস্থিতির মাধ্যমে সবচেয়ে ভাল ভোট দিতে তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে বাংলাদেশে কমপক্ষে ২০ শতাংশ ভোটার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে থাকে। আওয়ামী লীগ ভোটে সুযোগ না হলে অর্ন্তভুক্তিমূলক নির্বাচন কীভাবে হবে ?