সবাইকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকী পালন করবে জুলাই-৩৬
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৪৯ এএম, ২ আগস্ট ২০২৫ শনিবার

বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কালীন আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে নিউইয়র্কে সক্রিয় থাকা গণঅভ্যুত্থানের সব অংশীজনকে নিয়ে জুলাই- গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকীর অনুষ্ঠান করবে জুলাই-৩৬। অন্য কোন সংগঠন বা অনুষ্ঠানের সঙ্গে নিউইয়র্কের জুলাই-অংশীজনদের কোন সম্পর্ক নেই। গত বুধবার জ্যাকসন হাইটসের ইটজি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্ল্যাটফর্মটি এ কথা জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানকালীন নিউইয়র্কে আন্দোলনে অংশ নেয়া ফাহাদ হোসাইন, কাজী মো. হাসান সিদ্দিকী, তাওহীদ তানজীম, অনিক রাজ, শাহ আহমেদ সাজ, রওশন হক, লোকমান আহমেদ, জাহেদ হাসান সুমন, আহমেদ সোহেল, আল-আমীন রাসেল, মেরি জোবায়দা, তামজীদ আবদুল্লাহ, রহমত উল্লাহ, মেহরাব হোসাইন, মুশফিকুর রহমান অন্তু প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখি বক্তব্যে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মর্যাদা ও শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। কারণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, এটি আবেগ ও অনুভূতির পবিত্র বিষয়। আবু সায়েদ, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, ফারহান ফাইয়াজ, রিয়া গোপসহ হাজার শহীদের রক্তে রাঙা এই আন্দোলনে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ তাদের মূল্যবান জীবন, সময় ও শ্রম দিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের আত্মত্যাগকে কখনোই মলিন হতে দেয়া যাবে না।
এমন প্রেক্ষাপটে আগামী ৩ আগস্ট একজন বিশেষ ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে পুঁজি করে ‘প্যাট্রিয়ট অব বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। শুরুতে সবইকে নিয়ে এ অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো আচরণ করা হচ্ছে এবং আন্দোলনের পবিত্রতাকে বাণিজ্যিকীকরণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে উদ্বেগের প্রথম কারণ হলো স্বচ্ছতার অভাব। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছেন, অনুষ্ঠানের ফান্ডিং সোর্স সম্পর্কে স্পষ্টতা নেই এবং জুলাই আন্দোলনের প্রকৃত অংশগ্রহণকারীদের যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। যাতে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার আশঙ্কা রয়েছে। সবচেয়ে গুরুতর আশঙ্কা হলো রাজনৈতিক ঝুঁকি। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সাফাই গাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই সমস্যা সমাধানে সবাই মিলে তিনবার ঐক্যবদ্ধভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে বৈঠক বসেও ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারিনি তার একগুঁয়ে আচরণ ও স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে। আমরা চেয়েছিলাম সমন্বিতভাবে কাজ করতে, কিন্তু অস্বচ্ছতা ও একক সিদ্ধান্তের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাই এমন পরিস্থিতিকে এটা পরি এটা পরিষ্কার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে যে, ৩ আগস্টের সঙ্গে জুলাই সব অংশীজন বা জুলাই-৩৬ এর কোন সম্পর্ক নেই বরং। ‘জুলাই ৩৬’ প্লাটফর্ম এবং সব স্তরের প্রবাসী জুলাই আন্দোলনের সমর্থকরা মিলে আগস্ট মাসের শেষের দিকে যথাযথ মর্যাদায় একটি কর্মসূচির আয়োজন করবে। এই কর্মসূচিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত অংশগ্রহণকারীদের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করা হবে, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হবে এবং আন্দোলনের মূল চেতনা ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটাবে। কারণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো ব্যক্তিবিশেষের একচেটিয়া সম্পত্তি নয়। এটি সকল আন্দোলনকারী ও স্বাধীনতাকামী মানুষের সম্মিলিত অর্জন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা কোনো ব্যক্তির ব্যাবসায়িক স্বার্থে ব্যবহারের জন্য নয়। তাই এর পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট থাকব।
এ সময় ‘প্যাট্রিয়ট অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘প্যাট্রিয়ট অব বাংলাদেশ’ একক ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। এমন গর্ভের একটি বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠান সবাইকে সঙ্গে রেখেই করার কথা ছিল। কিন্তু বাইরের কেউ তো দূরের কথা সংগঠনের কার্যকরি কমিটির সাত সদস্যের ছয় জনকেই কিছুই জানানো হচ্ছে না। এমনকি আমি সাধারণ সম্পাদক, আমাকেও জানানো হয়নি। করা অনুষ্ঠানে আসবেন, কারা সহযোগীতা করছেন কিছুই প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমি ‘প্যাট্রিয়ট অব বাংলাদেশ’ থেকে সব সম্পর্ক ছিন্ন করছি, পদত্যাগ করছি।
‘প্যাট্রিয়ট অব বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই বলে জানান রহমত উল্লাহ সহ অন্যরাও।
সংবাদ সম্মেলনে জুলাই-২৪ সহ দেশের বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত মাগফিরাত কামনা ও সকল আহতদের জন্য দোয়া চাওয়া হয়। এছাড়াবন্দুক সহিংসতায় নিহত এনওয়াইপিডির অফিসার দিদারুল ইসলামের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে শোক জানানো হয়।