করোনা ঠেকাতে ঢাকা বিমানবন্দরে নেই কার্যকরী পদক্ষেপ
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০৮ এএম, ৮ জুলাই ২০২৫ মঙ্গলবার

- নেই সতর্কতা চিহ্ন ও পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজিং বুথ
- যথাযথ পদক্ষেপ নিতে উদাসীন কর্তৃপক্ষ
- স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাচল করছে অধিকাংশ যাত্রী
বিশ্বজুড়ে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতিবেশী দেশসহ অনেক রাষ্ট্র ইতোমধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করলেও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা– যেটি দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার– সেখানে দেখা যাচ্ছে চরম অবহেলা। করোনার পুনরায় বিস্তার ঠেকাতে কোনো কার্যকরী স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, আগত বা প্রবাসী যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, স্যানিটাইজার সরবরাহ বা মাস্ক পরিধানের বিষয়ে নেই কোনো নির্দেশনা বা তদারকি। অধিকাংশ যাত্রীই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচল করছেন। ইমিগ্রেশন বা লাগেজ বেল্ট এলাকায়ও নেই কোনো সতর্কতা চিহ্ন, নেই পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজিং বুথ।
একজন যাত্রী বলেন, "বিদেশ থেকে এসে এখানে নেমে মনে হলো করোনা বলে কিছু ছিলই না। কেউ কিছু বলছে না, দেখছেও না।"
স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিমানবন্দর এলাকায় এভাবে স্বাস্থ্যবিধির অনুপস্থিতি দেশের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেন, "বিমানবন্দর হলো ভাইরাস প্রবেশের মূল পথ। অতীতে বাংলাদেশ বিমানবন্দরে অব্যবস্থাপনার কারণে বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। এখন যদি আবার সেই উদাসীনতা দেখা দেয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, "এখনো পর্যন্ত নতুন কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে হয়তো আবার কড়াকড়ি শুরু হবে।"
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে বাস্তবায়নে দেখা দিচ্ছে গড়িমসি।
সচেতন মহল বলছে, করোনা হালকা হলেও এটি পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। তাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি।
নতুন এই ১১ জন আক্রান্তসহ ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৬৪৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কম, তবুও আগাম সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সংক্রমণের সংখ্যা এখনো অনেক কম হলেও আগের সপ্তাহের তুলনায় এ সংখ্যা ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম রাগিব সামাদ বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলছে সকল কার্যক্রম। আগত যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ, মাস্ক পরিধান এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশফেরত যাত্রীদের মধ্যে কেউ উপসর্গ বহন করছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্দেহভাজন কাউকে প্রয়োজনে বিমানবন্দরের স্থাপিত কোয়ারেন্টাইন ইউনিটে পাঠানো হচ্ছে।