আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের বনভোজন
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৩৮ এএম, ২৮ জুন ২০২৫ শনিবার

নিউইয়র্কে একদল কলম সৈনিক নাগরিক কোলাহল ছেড়ে ‘বনছায়ায়’ একদিনের জন্য যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন। ছেলে-বুড়ো থেকে শুরু করে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ছিলেন সকলে মাতোয়ারা। খরতাপ ছিল, তবে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে সমবেতরা আত্মতৃপ্তির শীতল ছায়ায় ডুবে ছিল যেন। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আয়োজিত বনভোজন ‘বনছায়ায় একদিন’ এ অংশ নিয়ে অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। প্রবাস জীবনে কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে এমন সুযোগ আসায় অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেন গত ২১ জুন শনিবার। নিউইয়র্কের বিভিন্ন স্থান থেকে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সদস্যরা তাদের পরিবারের সদ্যেদের নিয়ে উপস্থিত হতে থাকেন লংআইল্যান্ডের সানকিন মেডো স্টেট পার্কে। পাশাপাশি অতিথিরা আসেন। চারপাশে সবুজে ঘেরা পরিবেশে এসে অনেকেই বিশাল প্যাভেলিয়ান ছেড়ে গাছের নিচে আড্ডায় মেতে উঠেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বাংলা খবরের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আল আমিন রাসেলের সৌজন্যে নাস্তা খাওয়ার পালা। চমৎকার আবহাওয়ার মধ্যে চলে নাস্তা খাওয়ার পালা। ক্লাব কর্মকর্তা-সদস্য ও অতিথিদের নিয়ে ফিতা কেটে আকর্ষণীয় এ ইভেন্টের উদ্বোধন করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত ওসমান রচি। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য দর্পণ কবীরের উপস্থাপনায় বনভোজনের বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হয়। বনভোজনের আহ্বায়ক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বনভোজনের নানা বিষয় নিয়ে বর্ণনা করেন। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বনভোজন কমিটির সমন্বয়ক মনজুরুল হক। দুপুরের খাবারের আগে শিশুদের বিভন্ন খেলায় প্রতিযোগিতা ছিল। এরিমধ্যে ক্লাব সদস্য তাপস কুমার সাহার কাছ থেকে ক্লাব সদস্যরা বনভোজনের জন্য তৈরি টি-শার্ট ও ক্যাপ গ্রহণ করেন। এরপর নানান ধরনের আইটেম দিয়ে দুপুরের খাবার। খাবার পর্ব শেষ হতেই আকর্ষণীয় সজ্ঞীত পরিবেশনা। শিল্পী শাহ মাহবুব ও নাজু আকন্দ মাতিয়ে তোলেন বনভোজনে আগতদের। আশপাশের বিভিন্ন স্পট থেকে ভিনদেশিরাও ছুটে চলে আসেন প্যাভিলয়নে। তারা গানের সাথে নেচে আনন্দ প্রকাশ করেন।এসময় মঞ্চে প্রবেশ করে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ। এরপর শুরু হয় সদস্যদের ফুটবল দিয়ে গোলপোস্টে গোল দেয়ার প্রতিযোগিতা। তবে অতিথিরাও এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। পাশাপাশি নারীদের আকর্ষণীয় পিলো পাসিংয়ে অংশ নেন সদস্য ও অতিথিরা । মশিউর রহমান মজুমদারের নেতৃত্বে খেলাগুলো পরিচালনায় অংশ নেন মোহাম্মদ সাঈদ, অর্থ সম্পাদক মল্লিকা খান মুনা এবং সদস্য সীমা সুস্মিতা। খেলা পর্ব শেষে পরিবেশন করা হয় মুরগির বারবিকিউ ও ভূট্টা । পাশাপাশি কাঁচা আমের ভর্তা ও মুড়ি ভর্তা।রকমারি মুখরোচক খাবারের আয়োজনে মুগ্ধ আগতরা। খাবার পরিবেশনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের সদস্য শামীম আহমেদ, সদস্য দীপক কুমার আচার্য ও খোরশেদ আলম রিংকু। বিশেষভাবে সহযোগিতা করেন নারায়নগন্জ জেলা সমিতির সভাপতি মোস্তফা জামাল টিটু, শামসুল আলম লিটন, নিতাই দাস ও আরো কয়েকজন। বনভোজনে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম , বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ঢাকা এসোসিয়েশনের সভাপতি দুলাল বেহেদু, ওগান্ডার অনারারী কন্সাল জেনারেল আবুল হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সোহাগ খান , এক্টিভিস্ট আব্দুর রশিদ বাবু, ব্যবসায়ি সোহেল গাজী প্রমুখ।
বনভোজনের মূল আকর্ষণ ছিল রেফেল ড্র। রেফেল ড্র শুরুর আগে লটারির টিকেট বিক্রির কার্যক্রমে নামেন ক্লাবের সদস্য এস.এম. সারোয়ার হোসেন । এরআগে বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ক্লাব সভাপতি শওকত ওসমান রচি এবং ক্লাব কর্মকর্তারা।
রেফেল ড্র’তে (লটারী) স্টার ফার্নিচার এর সৌজন্যে প্রথম পুরস্কার বেডরুম সেট পেয়েছেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ। প্রথম পুরস্কারের মূল্য আড়াই হাজার ডলার। দ্বিতীয় পুরস্কার স্বর্ণের চেইন দিয়েছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক জাহিদ আলম , এস্টোরিয়া ডিজিটাল ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস এর কর্ণধারা নজরুল ইসলামের সৌজন্যে ৩য় পুরস্কার ল্যাপটপ, শাহ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শাহ্ জে চৌধুরীর সৌজন্যে ৪র্থ পুরস্কার ল্যাপটপ, উৎসব ডটকম এর কর্ণধার রায়হান জামানের সৌজন্যে ৫ম পুরস্কার আপেল ওয়াচ, এটর্নি অশোক কর্মকার এর সৌজন্যে ৬ষ্ঠ পুরস্কার আপেল ওয়াচ। এ ছাড়া আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের এবারের বনভোজন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সময় নিয়মিতভাবে এই প্রেসক্লাবকে সহযোগিতা করার জন্য দু’জন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে সম্মানিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তারা হচ্ছেন গোল্ডেন এইজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট ও সিইও শাহ নেওয়াজ এবং স্টার ফার্নিচার এর সিইও রকি আলিয়ান। বনভোজনে রকি আলিয়ানের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন ক্লাব সভাপতি ও কর্মকর্তারা।