ঐক্যবদ্ধ ৩৯তম সম্মেলন নায়াগ্রায়
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৩৬ এএম, ২১ জুন ২০২৫ শনিবার

এক হলো ফোবানার দুই গ্রুপ
কয়েক ভাগে বিভক্ত ফোবানার (ফেডারেশন অব বাংলাদেশি এসোসিয়েশনস অব নর্থ আমেরিকা) দুটো গ্রুপ এক হয়েছে। নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে তারা ঐক্যবদ্ধ ভাবে ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনের আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। তিন দিনের সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্কের পর্যটন শহর নায়াগ্রাতে। এবারের সম্মেলনের শ্লোগান ‘প্রবাসী নতুন প্রজন্মই হোক আগামী ফোবানার শক্তি’।
গত ১৬ জুন জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। শাহনেওয়াজ এবং গিয়াস আহমেদের নেতৃত্বাধীন ফোবানা এক হওয়া উপলক্ষ্যে আয়োজিত যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফোবানার স্ট্রিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান শাহনেওয়জ, ফোবানার স্ট্রিয়ারিং কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ, এক্সিকিউটিভি সেক্রেটারি কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, মেম্বার সেক্রেটারি মঈনুল হক চৌধুরী হেলাল, ফোবানার কমিটির সদস্য মোহাম্মদ হোসেন খান, আলী ইমাম শিকদার, হাসানুজ্জামান, আবু দারা জুবায়ের, খন্দকার ফরহাদ, রহিম নিশান, ফাহাদ সোলায়ান, সাংবাদিক সাহাবুদ্দিন সাগর, ওয়াহেদ কাজী এলিন। ফোবানার স্টিয়ারিং কমিটির এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি কাজী আজম সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে শাহনেওয়াজ বলেন, আমাদের মধ্যকার কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে পৃথকভাবে সম্মেলন আয়োজন করেছি। আয়োজন পৃথক হলেও মন এবং মননে দু’পক্ষই এক ছিল। আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। তাই ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনটি ঐক্যবদ্ধ ভাবে নিউইয়র্কের আলোকিত ও পর্যটক আকৃষ্ট শহর নায়াগ্রাতে আয়োজন করা হবে। আগামী ২৯, ৩০, ৩১ আগস্ট নায়াগ্রার হোটেল শেরাটনের নান্দনিক ভেন্যুতে এ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাংলাদেশি প্রবাসীরা যোগ দেবেন।
উল্লেখ্য, ফোবানা উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের বৃহত্তম সংগঠন। এটি মূলত: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও কানাডা থেকে পরিচালিত বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম। ১৯৮৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রথম সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফোবানার যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ফোবানা তিন ভাগে বিভক্ত।
পরে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন গিয়াস আহমেদসহ অন্যরা। গিয়াস আহমেদ, কমিউনিটির ঐক্য প্রক্রিয়ায় সবার সহায়তা প্রত্যাশা এবং প্রবাস প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে রাখার পাশাপাশি মাতৃভূমির কল্যাণে নিবেদিত থাকার সংকল্প ব্যক্ত করেন।
কানাডা এবং আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে থাকা, বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক, এমনকি এদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা নতুন প্রজন্মকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে জানান আয়োজকরা।
ফোবানা অন্য অংশের আলাদা সম্মেলনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আয়োজকরা জানান, ফোবানার আরো দুটি গ্রুপ রয়েছে, যারা জর্জিয়ার আটলান্টা এবং কানাডার মন্ট্রিয়ালে একইসময়ে সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের সাথেও যোগাযোগ হচ্ছে। ঐক্যের প্রক্রিয়া এবার ফলপ্রসূ না হলেও ভবিষ্যতে সব পক্ষ এক হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
আয়োজকরা আরও জানান, এবারের সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতি, সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন রচনার জোর প্রয়াস থাকবে। আমরা মনে করি এবারের ফোবানা সম্মেলন উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য একটি মিলনমেলা এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেবে। বাংলাদেশের কৃষ্টি, কালচার, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সৃজনশীলতাকেও এবারের সম্মেলনে প্রাধান্য দেয়া হবে। আমরা প্রবাসীদের নিয়ে বিজনেস নেটওয়ার্ক তৈরি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, বিজনেস লাঞ্চ, বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন আসর, ইয়ুথ গ্রুপের কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ের ওপর অগ্রাধিকার দেবো। এবারেও ফোবানার কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশ করা হবে একটি ম্যাগাজিন বা স্মরণিকা। এবারের সম্মেলন দল-মতের উর্ধ্বে থেকে বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ঐক্যের শক্তিকে জোরালো করবে। আর এবারের সম্মেলনে প্রবাসীরা যাতে ফেলে আসা বাংলাদেশকে খুঁজে পায় সে চেষ্টা থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফোবানা নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতি, সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন রচনার জোর প্রয়াস থাকবে। যা উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য একটি মিলনমেলা এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেবে। সম্মেলনের মূলপ্রতিপাদ্যকে প্রাধান্য দিয়ে প্রবাসের নতুন প্রজন্মকে কিভাবে ফোবানার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি ও দায়িত্ব দেয়া যায় সে বিষয়ে প্রাধান্য থাকবে।