বৃহস্পতিবার   ১৯ জুন ২০২৫   আষাঢ় ৫ ১৪৩২   ২২ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

যুদ্ধই নেতানিয়াহুর টিকে থাকার শেষ আশ্রয়!

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৫২ এএম, ১৯ জুন ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করার পর ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার যেখানে মাত্র এক সপ্তাহ আগে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হয়েছিল, সেখানে এখন বিরোধী দলগুলো পর্যন্ত যুদ্ধনীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার কঠিন সমঝোতার মাধ্যমে নেতানিয়াহুর ডানপন্থী জোট সরকার সংসদে আস্থা ভোটে টিকে যায়। উল্টোদিকে সোমবার ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ব্যর্থ হয়। এর মূল কারণ, ইসরায়েলের ইরান আক্রমণের ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ দ্রুত বদলে যায়।

এমনকি প্রধান বিরোধী দলের নেতারাও নেতানিয়াহুর অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মধ্যপন্থী ইয়াইর লাপিদ সম্প্রতি ইরান আক্রমণকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এসময় নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার করমর্দনের ছবি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেছেন, ‘এখন ইসরায়েলে কোনো ডান-বাম বিভাজন নেই, কোনো বিরোধী দল বা সরকার নেই’—সবাই ইরান যুদ্ধের পক্ষে।

তবে আরব-ইসরায়েলি দলের সংসদ সদস্য আইদা টুমা-সুলাইমান জানিয়েছেন, ‘আমরা ছাড়া কেউ এ যুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলছে না। এমনকি যারা নিজেদের বামপন্থী বলে দাবি করে তারাও যুদ্ধের পক্ষে।’

আরও উল্লেখযোগ্য বিষয়, গত সপ্তাহেও নেতানিয়াহু সরকারের গাজা যুদ্ধের অবসান, অক্টোবর ৭ হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার তদন্ত এবং দুর্নীতির মামলার কারণে চাপে ছিল। রিজার্ভ সেনারা পর্যন্ত ডিউটি করতে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু ইরান যুদ্ধের কারণে সরকারপক্ষ ও বিরোধীপক্ষ সব মিলেই এখন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বকে সমর্থন দিচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমর্থন সাময়িক। যদি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয় কিংবা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সমাপ্তি নিশ্চিত না হয়, তবে জনগণ আবার নেতানিয়াহুর বিপক্ষে যেতে পারে।

ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিমরড ফ্লাশেনবার্গ জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর যুদ্ধনীতি ইসরায়েলি সমাজে ‘ইরানই সব সমস্যার উৎস’ ধারণাকে আরও শক্ত করেছে। কিন্তু তিনি সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধ যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন যুক্তরাষ্ট্রই কেবল এই সংঘাত বন্ধ করতে পারে।

লেখক: সাইমন স্পিকম্যান করডাল