ব্রঙ্কসে বাফা’র বৈশাখী উৎসব
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:৫৬ এএম, ১৭ মে ২০২৫ শনিবার

বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা)-এর বর্ণাঢ্য বৈশাখী শোভাযাত্রা ও উৎসবে মুখরিত হয়ে ওঠে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের স্টারলিং বাংলাবাজার। গত ১০ মে রবিবার প্রবাসে দেশীয় সংস্কৃতির বৈশাখী উৎসবে ব্রঙ্কসের স্টারলিং বাংলাবাজারে হাজারো বাংলাদেশীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
রোববার দুপুর সাড়ে ৩টায় বাফা স্টুডিওর সামনে থেকে বর্ণিল বৈশাখী শোভাযাত্রা শুরু হয়। বর্ণিল পোশাকে সেজে ওঠা নারী, পুরুষ ও শিশুরা ঢাক-ঢোলের বাদ্যির সঙ্গে নেচে গেয়ে স্টারলিং এভিনিউতে শোভাযাত্রার শুরু হয়। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নানা প্রতিচ্ছবি প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। ওভাল পার্ক ঘুরে শোভাযাত্রাটি অলমস্টেড এভিনিউয়ের উৎসব মঞ্চে এসে শেষ হয়।
এরপর অলমস্টেড এভিনিউতে শুরু হয় বৈশাখী উৎসব। মেলায় বসেছিল বিভিন্ন পণ্যের পসরা। দেশীয় পোশাক, নজরকাড়া গহনা, হাতে তৈরি শিল্পকর্ম ও শিশুদের রঙিন খেলনায় সেজে উঠেছিল প্রতিটি স্টল। আগত দর্শনার্থীরা উৎসুক মনে প্রতিটি স্টল ঘুরে দেখেন এবং পছন্দের জিনিস কেনেন।
স্থানীয় শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত, বৈশাখীর সুর, নৃত্য এবং কবিতা আবৃত্তি ছিলো অন্যতম আকর্ষণ। বাফার শিক্ষার্থী ছাড়াও সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আফতাবুজ্জামান স্পন্দন, যোগমায়া, তারেক, সিয়াম শাহাদাত, বুলা আফরোজ, শারমিন তানিয়া, ইশরাত শার্মি ও তাহমিনা শহীদ প্রমুখ। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মারিয়া স্মৃতি, সাচী পেনে ও রাধিকা সামছুন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন শামিমারা বেগম ও নাসরিন সাহানা।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের সিনেটর নাথালিয়া র্ফান্দাদেজ, কাউন্সিল ওমেন আমান্দা ফারিয়াস সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখা চারজন গুণী নারীকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। সিনেটর নাথালিয়া ফার্নান্দেজের হাত থেকে সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রক্লেমেশন গ্রহণ করেন শামিমারা বেগম ও ফারজানা ইয়াসমিন। কাউন্সিল ওমেন আমান্দা ফারিয়াস তাহমিনা শহিদ, ক্লারা রোজারিও, দুররে মাকনুন নবনী ও নাসরিন সাহানার হাতে তুলে দেন সাইটেশন।
সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, সালেহ আহমেদ, সাইদুর রহমান লিংকিন ও মুজাহিদ আনসারী প্রমুখ।
বৈশাখী উৎসবের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বাফার কর্ণধার ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা, বিশ্ব মঞ্চে বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরা এবং সকলের মধ্যে একাত্মতা সৃষ্টি করাই এই আয়োজনের প্রধান লক্ষ্য।"
সন্ধ্যা পর্যন্ত স্টারলিং বাংলাবাজার প্রবাসী বাঙালিদের আনন্দ আর উল্লাসে মুখরিত ছিল, যা প্রমাণ করে প্রবাসেও বাঙালি সংস্কৃতি তার স্বকীয়তা বজায় রেখেছে।”