বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪   বৈশাখ ২৫ ১৪৩১   ০১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

হোপে আশাহত বাংলাদেশ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:০২ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। উইন্ডিজের সামনে ২৫৫ রানের সহজ লক্ষ্য দেয় টিম টাইগার। এক শাই হোপের কাছেই সিরিজ জেতা আশাহত হলো টাইগারদের। ৪ ইউকেটে জয় পায় সফরকারী উইন্ডিজ। সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এখন সিরিজ জিততে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে মাশরাফি বাহিনীর।

 

সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে সফরকারীরা। কিন্তু শুরুতেই তাদের লক্ষ্য কঠিন করে দেয় মিরাজ। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় মাত্র ৬ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙেন এই টাইগার স্পিনার। চন্দ্রপাল হেমরাজকে এলবি ডাবলিউ তে আউট করে ফেরালেন তিনি। হোপ আর ব্রাভো জুটিতে এগোচ্ছিল উইন্ডিজ। ঘুরে দাঁড়িয়ে দলীয় অর্ধশত পার করে ফেলে সফরকারীরা। কিন্তু বাঁধ সাধল রুবেল। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড করে ব্রাভো-হোপের জুটি ভাঙলেন এই পেসার। ব্রাভো ফিরে গেলে আসেন স্যামুয়েলস। স্যামুয়েলস- হোপ জুটিতে দলীয় শতক পার করে সফরকারীরা।

 

এরপর টাইগারদের উপর চাপ ধরে রাখেন স্যামুয়েলস ও হোপ। তাদের পঞ্চাশ রানের জুটিতে এগোয় উইন্ডিজ। অবশেষে মুস্তাফিজের কাটারে মুশফিকের তালুবন্দি হন মারলন স্যামুয়েলস। এরপর ভয়ংকর হতে শুরু করা হেটমেয়ারকে বদলি হিসেবে নামা নাজমুল অপুর তালুবন্দি করেন রুবেল।এর কিছু পরেই রোভম্যান পাওয়েলকে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত করেন মাশরাফি। দলকে জয়ের পথে নিতে চেজকে সঙ্গী করেন শাই হোপ। তবে তাকেও তামিমের তালুবন্দি করেন মুস্তাফিজ। ফলে ম্যাচটি আরো জমজমাট করে তুললেন কাটার মাস্টার। তবে বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে ব্যাট করা শাই হোপ তুলে নিলেন নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। এই ভাবে চলতে থাকে। হোপের সঙ্গী হয় পল। তাদের দুইজনের ব্যাটে জয়ের দিকে এগিয়ে যায় উইন্ডিজ। শাই হোপ ১৪৮ ও পল ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

 

দুপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তামিমের সাথে ওপেন করতে আসেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ৯ রানের মাথায় ডান পায়ে আঘাত পান লিটন। ওশান থমাসের ১৪৩ কিলোমিটার গতির বল সরাসরি গিয়ে লিটনের ডান পায়ের অ্যাঙ্গেলে আঘাত হানে। এরপর খুঁড়িয়ে সেই রানটি সম্পন্ন করলেও মাঠে বসে পড়ে লিটন। সাথে সাথেই মাঠে ফিজিও চলে আসে। কিন্তু অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় লিটনের পক্ষে হেঁটে মাঠের বাইরে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই স্ট্রেচারে করে রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। এর আগে ৭ বলে ১ চারে ৫ রান করেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। লিটনের বদলি হিসেবে মাঠে নেমে শূন্য রানে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস। ফলে টানা দুই ম্যাচেই শূন্য রানে ফিরলেন তিনি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে দারুণ ব্যাট করলেও এরপর ক্রমাগত ব্যর্থই হতে চলেছেন তিনি।

এরপরেই দলের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। আর নিজেদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলীয় শতক পার করলেন দুই টাইগার। আর নিজের ক্যারিয়ারের ৪৩ তম ফিফটি করলেন তামিম। আর মুশফিক পেলেন ৩২ তম।

এরপরই ঘটে অঘটন। তাদের ১১১ রানের জুটি ভাঙেন দেবেন্দ্র বিশু। ব্যক্তিগত ৫০ রান করার পরেই ফিরে যান তামিম। তার পরপরই শাহি হোপের বলে থমাসের কাছে ক্যাচ দিয়ে ব্যাক্তিগত ৬২ রানে ঝড় থামে মুশফিকের। তামিম-মুশফিকের পর হাল ধরেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ। আর তাদের কাঁধে ভর করে আগাচ্ছে টিম বাংলাদেশ। দেড়শ রান পার করল টাইগাররা।

 

 

৬১ রানের জুটি ভাঙে রিয়াদের উইকেটে। দলের রানে গতি আনতে গিয়ে পাওয়েলকে উড়িয়ে মারতে যান রিয়াদ। ব্যক্তিগত ৩০ রানে হেটমেয়ারের তালুবন্দি হন তিনি। এরপর সৌম্যকে সঙ্গী করে দলের দুইশ পার করে বাংলাদেশ। কিন্তু সরকারের কপালে সুখ সইল না। মাত্র ৬ রানে থমাসের বলে বিশুর হাতে বল তুলে দিয়ে ফিরলেন তিনি।

ডান পায়ে আঘাত পেয়ে ফিরে গিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু আবারো মাঠে নেমে কিছুই করতে পারলেন তিনি। ৭ রানে ফিরে আর ১ রান করেই ফিরতে হলো তাকে। পলের বলে আকাশে উড়িয়ে দিলে তা লুফে নেন হেটমেয়ার। নামলেন অধিনায়ক।

কিন্তু তখনই ঘটল অঘটন। ৬২ বলে ৬৫ রান করে রোচের বলে বোল্ড আউট হয়ে ঘরে ফেরেন সাকিব। এরপর মাশরাফির সঙ্গে হাল ধরেন মিরাজ। কিন্তু বেশি দূর আগাতে পারেনি দল। ২৫৫ তে শেষ হয়ে যায় ইনিংস। এই রানে ৭ উইকেট হারাতে হয় টাইগারদের। মাশরাফি ও মিরাজ ৬ ও ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।