সোমবার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আশ্বিন ৬ ১৪৩২   ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আবারও সরকার উৎখাতের শঙ্কা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৫৪ এএম, ৪ মে ২০২৪ শনিবার


 

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও সরকার উৎখাতের আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেছেন, বাম ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। বিশেষ করে যারা অতি বাম, সব সময় মনে করি-তারা প্রোগ্রেসিভ দল, তারা খুবই গণমুখী দল ইত্যাদি। সেখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক আছে তারা আমাকে উৎখাত করবে, তাহলে পরবর্তী সময়ে কে আসবে? সেটা কি ঠিক করতে পেরেছে? সেটাই আমার প্রশ্ন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার শক্তি জনগণ। জনগণ যতদিন চাইবে ক্ষমতায় থাকব। মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য যত চক্রান্ত আর বাধা আসুক, আমরা বিজয় নিয়ে আসি। এখানে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্যে থাইল্যান্ড সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের অংশগ্রহণ, ১৪ দলীয় জোটের অবস্থা, আওয়ামী লীগের হীরকজয়ন্তী উদ্যাপন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার নিয়ে দেওয়া প্রতিবেদন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সরকারবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র, যানজট কমাতে গৃহীত পরিকল্পনা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ঘণ্টাব্যাপী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে মঙ্গলবার শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘অতি ডান, অতি বাম এক হয়ে সরকার উৎখাত করতে চায়।’ তার এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কারা আসবে, কে আসবে ক্ষমতায়। কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায়। সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। আর সেটা স্পষ্ট নয় বলে তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না। বিদেশে বসে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছে করুক, তাদের তো বাধা দিচ্ছি না।
বিরোধীদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যারা ‘গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই’ বলে, তারাই তো মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এটা তারা ভুলে যায়। আর অনেকে নানা ধরনের কথা বলে। কেউ উন্নয়ন চোখে দেখে, কেউ দেখে না। নাও দেখতে পারে। কারণ, তাদের হয়তো উন্নয়নের ফর্মুলা ভিন্ন। আমার উন্নয়ন হলো গ্রামের মানুষ, গরিব মানুষ, তারা যেন দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারে। তাদের একটু বাসস্থান হবে, চিকিৎসা পাবে, শিক্ষা পাবে, জীবনমান উন্নত হবে। আপনারা সাংবাদিক, আপনারাই বলেন, ১৫ বছর আগে দেশের অবস্থাটা কী ছিল? এখন কি কোনো পরিবর্তনই হয়নি। কেউ যদি না দেখে, আমাদের তো কিছু করার নেই!
যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন প্রধানমন্ত্রী : যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের দেশে এই যে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, গুলি করে একেবারে সাধারণ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, এসব তো তাদের দেখা উচিত। নিজের ঘর আগে সামলানো উচিত। আমেরিকায় বিভিন্ন স্কুল, শপিংমল, রেস্টুরেন্টে অনবরত গুলি হচ্ছে, আর মানুষ মারা যাচ্ছে। এমন কোনো দিন নেই বোধহয়, আমেরিকায় মানুষ না মারা হচ্ছে। তাদের সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।
আমেরিকায় বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ করে শেখ হাসিনা বলেন, এর আগেও আমাদের বাংলাদেশি কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি এবং বিচার করে তারা আমাকে জানিয়েছে। আমাদের যেটুকু করার, সেটুকু আমরা করে যাচ্ছি। শুধু এখানেই নয়, আমেরিকায় বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
আন্দোলন দমনে আমেরিকার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন : সম্প্রতি ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন আন্দোলন দমন করতে আমেরিকার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের পুলিশকে বলে দিই, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারে। সেটা করতে পারি?
তিনি বলেন, আমরা তো পুলিশকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। সেই ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ সালে আমি তো পুলিশকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। ফল হয়েছে আন্দোলনের নামে তারা পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সেই সঙ্গে তাদের হাসপাতালে আক্রমণ, গাড়ি পোড়ানো। কাজেই আমার মনে হয়, এখন আমাদের পুলিশ কিন্তু আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা নিতে পারে। আমার মনে হয়, সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন।