সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১   ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মার্কিন মুলুকে শান্তদের অপেক্ষায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৪:২০ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২৪ মঙ্গলবার

ক্ষণগণনা শুরু হয়ে গেছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। টুর্নামেন্ট সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উন্মাদনার আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছে দেশ থেকেই। টিকিট আরও আগেই সোনার হরিণে রূপ নিয়েছে। প্রবাসীদের এখন অপেক্ষা, বাংলাদেশ দল কবে আসবে মার্কিন মুলুকে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে।

প্রথমবারের মতো সহ-আয়োজক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাচ্ছে আইসিসির কোনো ইভেন্ট, সেখানকার মাঠ-কন্ডিশন-উইকেট নিয়ে কৌতূহল আছে দলগুলোরও। কোনো দলেরই যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশনে খুব একটা খেলার অভিজ্ঞতা নেই। সাধারণত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড উপমহাদেশের প্রবাসী দর্শকের কথা চিন্তা করে ফ্লোরিডায় কিছু টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করেছে এত দিন। ২০১৮ সালের আগস্টে ফ্লোরিডায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই টি-টোয়েন্টি সিরিজটার কথা মনে আছে? ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে ফ্লোরিডায় এসে সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচই জিতেছিলেন সাকিবরা। লডারহিলে ওই দুই ম্যাচে এত প্রবাসী বাংলাদেশি দর্শক ছিল, মনে হয়েছিল সিরিজের আয়োজক উইন্ডিজ নয়, বাংলাদেশ!

দর্শকের এই ঢল হয়তো জুনে টেক্সাস আর নিউইয়র্কেও দেখা যাবে। দুই বছর হলো যুক্তরাষ্ট্রে আছেন আফতাব আহমেদ। জাতীয় দলের সাবেক এই বাংলাদেশি ক্রিকেটার এখনই অনুভব করতে পারছেন মার্কিন মুলুকে বাংলাদেশি দর্শকদের ক্রিকেট উন্মাদনা। দুই দিন আগে ফোনে তিনি বলছিলেন, ‘টিকিট তো নাই ভাই! ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ৪০০-৫০০ ডলারের (৫০ হাজার টাকা) টিকিট এখানে বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১৫ হাজার ডলারে (এক-দেড় লাখ টাকা)! বাংলাদেশের খেলা দেখতে চাই কিন্তু আল্লাহই জানেন, কীভাবে টিকিটের ব্যবস্থা হবে! প্রচুর দর্শক হবে দুটি ভেন্যুতেই। নিউইয়র্কে সবচেয়ে বেশি টিকিটের সংকট। দুই শহরেই প্রচুর বাংলাদেশি প্রবাসীর বাস।’

অনেক দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন বাংলাদেশ দলের আরেক সাবেক ক্রিকেটার তাপস বৈশ্য। তিনিও জানালেন, বিশ্বকাপ সামনে রেখে কতটা রোমাঞ্চিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বললেন, ‘প্রবাসীরা অনেক রোমাঞ্চিত। একটা উৎসব উৎসব ভাব সবার মধ্যে। একটা ক্রিকেট বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে আমেরিকায়, বাংলাদেশ দল আসবে খেলতে, এটা নিয়ে সবাই এক্সাইটেড, আনন্দিত।’

আফতাব থাকেন আটলান্টায়। তাঁর শহরের অবস্থান নিউইয়র্ক ও ডালাসের মাঝে। মাইনর লিগ আটলান্টা ফায়ারের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করছেন একসময়ের মারকুটে ব্যাটার আফতাব। এখন মৌসুমের বিরতিতেও বসে নেই তিনি, স্থানীয় লিগে শনিবার-রোববারে ম্যাচ খেলেন। যে দেশের ক্রিকেট ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়, বড় কোনো ক্রিকেট সিরিজ-টুর্নামেন্ট আয়োজনের অভিজ্ঞতাও তাদের নেই, তারা কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে এত বড় টুর্নামেন্টের সহ-আয়োজক হতে? খবর মিলেছে, টুর্নামেন্ট শুরু হতে দুই মাসও বাকি নেই, অথচ নিউইয়র্কের স্টেডিয়াম এখনো তৈরি হয়নি। আফতাব অবশ্য এতে চিন্তার কিছু দেখছেন না, ‘এখানে বেশির ভাগ ক্রিকেট মাঠ উন্মুক্ত, আমাদের মতো স্থায়ী গ্যালারি নেই। যখন খেলা হয়, তখন অস্থায়ী গ্যালারি তৈরি করে নেয়। টাকার তো অভাব নেই এদের। এরা চাইলে দিনকে রাত বানাতে পারে, রাতকে দিন! বাইরে থেকে ভালো উইকেট আসছে। বেশির ভাগ ড্রপ-ইন পিচ। উইকেট শক্ত, বাউন্সি হবে।’

বাংলাদেশ ৮ জুন ডালাসে খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ১০ জুন নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ডালাসের ম্যাচ রাতে, নিউইয়র্কে দিনের আলোয়। নিউইয়র্কে বসবাসরত তাপসের কাছেও কিছুটা ধারণা মিলল যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশন সম্পর্কে, ‘পার্কের মধ্যে অস্থায়ী গ্যালারি (৩৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন) স্থাপন করে মাঠ তৈরি করছে। নতুন ছোট মাঠ, সামারে খেলা, গরম কন্ডিশন থাকবে। বৃষ্টি হবে না হয়তো। ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ আছে নিউইয়র্কে, হয়তে ভালো উইকেট তৈরি করারই চেষ্টা করবে। ছোট সীমানা হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ম্যাচে কেমন করতে পারে বাংলাদেশ—তাপসের অনুমান ভালোই করবে দল, ‘দল নির্বাচন যদি ভালো হয়, দুটি ম্যাচেই আমাদের সম্ভাবনা বেশি। পিচ থেকে যদি সহায়তা পায়, তাহলে মনে হয় দুটি ম্যাচেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে। আবহাওয়া ও পিচ অনুযায়ী নিউইয়র্কের কন্ডিশন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য কঠিন হবে, যতই ড্রপ-ইন পিচ হোক। পার্কের ভেতর মাঠ হওয়ায় হালকা বাতাস থাকবে। আমাদেরই বেশি সুবিধা থাকতে পারে।’ আর আফতাব বলছেন, ‘ভালো প্রস্তুতি আর ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে আসতে হবে টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত কিছু করতে।’