সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১   ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

উইন হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে কমিউনিটি

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:৩৪ এএম, ৬ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার


দায়ী পুলিশের শাস্তি ও ফুটেজ প্রকাশের দাবি : শনিবার শেষকৃত্য
 
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিওকে (১৯) হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটি। এর প্রতিবাদে গত ২৯ মার্চ জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ। সমাবেশ থেকে দায়ী পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি এবং ঘটনার ফুটেজ প্রকাশের দাবি জানানো হয়। এদিকে আজ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উডহ্যাভেনে এনএফ ওয়াকার অব কুইন্স ফিউনারেল হোমে (৮৭-৩৪, ৮০ স্ট্রিট, উডহ্যাভেন, নিউইয়র্ক ১১৪২১) সর্বসাধারণের দেখার জন্য উইন রোজারিও মরদেহ রাখা হবে। কাল শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে একই স্থানে শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থনার পর সেখানেও তাকে শেষবার দেখার ব্যবস্থা থাকবে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
গত ২৯ মার্চ ডাইভারসিটি প্লাজায় প্রবাসী বাঙালি খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন ও লাল মরিচ নামে দুটি সংগঠন পৃথক পৃথকভাবে দুটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। একই স্থানে গত সোমবার (১ এপ্রিল) বিকালে এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করে আঞ্চলিক সংগঠন গাজীপুর জেলা অ্যাসোসিয়েশন।
গত ২৯ মার্চ শত শত মানুষের সমাবেশে বক্তারা উইন রোজারিও হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানান। তারা বলেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দিন ইস্টার সানডে যেন এবার বিষাদে পরিণত হয়েছে। উইন রোজারিওর মৃত্যুর ঘটনার পর কমিউনিটি থেকে দাবি উঠলেও পুলিশের শরীরে থাকা ক্যামেরার কোনো ফুটেজ এখনও প্রকাশ করেনি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষ। ছিলেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, পেশাজীবী এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রবাসী বাঙালি খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি গ্যাব্রিয়েল তাপস গমেজ, এটর্নী মঈন চৌধুরী, বিকাশ গমেজ, লুথারেন চার্চের প্যাস্টর জেমস রয়, দক্ষিণ এশিয়ান-আমেরিকানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত ‘সেইফেস্ট’র প্রধান নির্বাহী মাজেদা এ উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট এএফএম মিসবাহুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুখেন জোসেফ গোমেজ।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ দুপুরে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত ওজোন পার্কে নিজ বাসা থেকে পুলিশকে ফোন করে সাহায্য চান উইন রোজারিও। নিহতের বাবার দাবি, ফোন পেয়ে পুলিশ তাদের বাসায় গিয়ে মায়ের সামনেই ছেলেকে ৬ রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে। পরে উইন রোজারিওর মানসিক সমস্যার কথা জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। এমন একজনকে কেন গুলি করে মারতে হলো এমন প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় কমিউনিটিতে। যদিও পুলিশের দাবি, উইন রোজারিও কাঁচি নিয়ে তাদের মারতে উদ্যত হয়েছিল।
নিহত উইন রোজারিওর বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা। তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের অস্ত্র নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
১৯ বছর বয়সী নিহত উইন রোজারিওর বাড়ি গাজীপুরের পূবাইলের হারবাইদ গ্রামে।