সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১   ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সাদি মহম্মদের আত্মহত্যা

ঢাকা প্রতিনিধি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৩০ এএম, ১৬ মার্চ ২০২৪ শনিবার

অভিমান নিয়ে চলে গেলেন

 

বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদ আর নেই। গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মারা গেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সাদি মহম্মদের ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ জানান, বুধবার তানপুরা নিয়ে সংগীত চর্চা করছিলেন তিনি। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ঘরের দরজা বন্ধ দেখেন। কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, তাঁরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, শিল্পী সাদি মহম্মদের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত।
মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নূরজাহান রোডের বাসার তৃতীয় তলায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
সাদি মহম্মদের জন্ম ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর। বাবা সলিমউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তাঁর বাবার নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে।
গত বছরের ৮ জুলাই সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর থেকে বিষন্নতায় ভুগছিলেন শিল্পী সাদি মহম্মদ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিল্পীর এক ঘনিষ্ঠজন জানান, মা হারানোর বেদনা ভুলতে পারেননি সাদি মহম্মদ। এছাড়াও এমন একজন কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী রাষ্ট্রীয় কোনো সম্মাননা পাননি। বুকভরা অভিমান নিয়ে সন্ধ্যার পরপরই তিনি নীরবে না-ফেরার দেশে পাড়ি দেন।
সাদি মহম্মদ রবীন্দ্র সংগীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বভারতীতে শান্তিদেব ঘোষ ও কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গান শেখেন তিনি।
২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে সাদি মহম্মদ সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তাঁর ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তাঁর ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। অসংখ্য রবীন্দ্র সংগীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও করেছেন তিনি।
সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে তাঁকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার।