সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১   ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বাংলাদেশে কাজ করতে চান ড. আরিফ

আজকাল রিপোর্ট

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:৫৮ এএম, ২ মার্চ ২০২৪ শনিবার

জেনেটিক টেস্টিং বিষয়ে সচেতনতার উদ্যোগ

 

জেনেটিক টেস্টিং কার্যক্রমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি ড. মোহাম্মদ আরিফ। তার মতে বাংলাদেশে লাখ লাখ পরিবারে বিকলাঙ্গ ও অটিস্টিক শিশু নিয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো স্বামী বা স্ত্রীকে দোষারোপ করে সংসার ভাঙার দিকে এগিয়ে যায়। উন্নত বিশ্বে এ সব শিশুদের উন্নত সেবা ও বিশেষায়িত স্কুলে পাঠিয়ে তাদের সুস্থ করে তোলা হয়। বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তাই এ ব্যাপারে তিনি সেবার প্রত্যয় নিয়ে জেনেটিক টেস্টিং ব্যবস্থার আমূল পরিবর্ত ঘটাতে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান।
ড. আরিফ নর্থশোর ইউনিভার্সিটি হসপিটালে ডাইরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটির এসিসট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন জুকার স্কুল অব মেডিসিন ডিপার্টমেন্টে। সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকাকে তিনি বলেন, নিজ পারিবারিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে জেনেটিক বিজ্ঞানে কাজ করাকে বেছে নিয়েছি। ২০১১ সালে আমার ছোট মেয়ে জন্ম নেয়। জেনেটিক স্ক্রিনিং টেস্টে তার একটি রোগ ধরা পড়ে। তা নিয়ে আমরা শংকিত হয়ে পড়ি। এমন পরিস্থিতিেিত একটা পরিবারে মানসিক কি দশা হয় তা ভুক্তভোগীরাই বুঝবেন। বাংলাদেশে এ ধরনের স্ক্রিনিং বা উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। এরপর থেকেই আমার স্টাডি ও পেশার ক্ষেত্র হিসেবে জেনেটিক্যাল সায়েন্সকে বেছে নেই। তিনি  বলেন, মায়ের পেটের বাচ্চাটি সুস্থ হবে কিনা তা নির্ধারণ করতে পারে জেনিটিক্যাল সায়েন্স। বাচ্চাটি বিকলাঙ্গ বা অটিস্টিক হবে কিনা তা অনেক আগেই নির্ধারণ করা সম্ভব। রোগটি কোন পর্যায়ে আছে তা ঠিক করাই বড় চ্যালেঞ্জ। চিকিৎসক ও পরিবারের আলোচনায় করণীয়টাই তখন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর এই সেক্টরে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। আমি সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে তা নিয়ে কাজ করতে চাই। ড. আরিফ দুঃখ করে বলেন, এ নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে আলোচনা করেছি, কিন্তু কোন আশাপ্রদ সাড়া পাইনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ‘মলিকুলার জেনিটিক টেস্টিং’-এর প্রসার ঘটাতে হবে। এর ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি  করতে হবে পেশাদার টেকনোলজিস্ট। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল স্কুলগুলোতে সার্টিফিকেট কোর্স চালু করতে হবে। সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত এই টেকনোলজিস্টদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য সহ উন্নত বিশ্বে। তাদের বিদেশে পাঠিয়ে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে।
ড. মোহাম্মদ আরিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমেস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজিতে মাস্টার্স করেছেন। ২০০১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬ সালে জাপান থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১০ সালে তিনি  যুক্তরাষ্টে আসেন। প্রথমে মাউন্ট সাইনাই হসপিটালে রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার শিক্ষা ও মেধার কারণে জেনেটিক সায়েন্সের উপর স্টাডি করার সুযোগ দেন। ২০২২ সালে যোগ দেন নর্থশোর হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি জেনিটিক্যাল ডিপার্টমেন্টের পরিচালক।