গ্রামীণের ৮টি প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখল’
ঢাকা প্রতিনিধি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৪:৩৮ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার

সংবাদ সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অভিযোগ
বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণসহ আটটি প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখলের’ অভিযোগ করেছেন। তারই প্রতিষ্ঠিত অপর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণসহ এসব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। ঢাকার মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডে ‘টেলিকম ভবন’ নামে ১৩ তলা একটি ভবনে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যালয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটায় টেলিকম ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা একটা ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছি। আমরা একটা স্বপ্নের বীজতলা হিসেবে এই ভবন তৈরি করেছিলাম। কিন্তু চারদিন আগে ১২ই ফেব্রুয়ারি কিছু বাইরের লোক এসে এটা জবরদখল করে নিলো। আমরা তাদের কাছে বাইরের লোক হয়ে গেলাম। আমরা পুলিশের সহায়তা চাইলাম তারা প্রথমে জিডি গ্রহণই করলো না। তারপর একবার এসে ঘুরে গেলো, কিন্তু কোন অসুবিধা দেখলো না’।
তিনি জানান, ‘আমরা বহুরকম দুর্যোগের মধ্যে যাই। কিন্তু এই রকম দুর্যোগ আর দেখিনি কোনদিন। তারা আমাদের দরজায় এসে তালা দিয়ে যাচ্ছে, সকালবেলা এসে আবার খুলে দিচ্ছে। এইরকম জবরদখল আর দেখিনি। আইন-আদালত কোথায় গেলো?’ প্রশ্ন রাখেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গত ১২ই ফেব্রুয়ারি বিকেলে টেলিকম ভবনে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয়ধারী কয়েকজন ব্যক্তি গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ‘দখলের’ খবর বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর এ নিয়ে প্রথমবারের মত কথা বললেন ড. ইউনুস।
বৃহস্পতিবার টেলিকম ভবনের সামনে যা ঘটেছে: সকাল পৌনে নয়টা থেকেই মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডে অবস্থিত এ ভবনের সামনে বেশ কিছু লোকজন জড়ো হয়। এ সময় তারা ভবনটি অবরোধ করে রাখে। যাতে ভেতরে কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ সময় তারা ভবনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছিলো। বেশ কিছু মহিলা এ সময় ঝাড়– মিছিল করে। তারা ভবনের সামনের রাস্তায় বসে পড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এদেরই একজন মহিলা দাবি করেন, তাদেরকে এখানে বসে থাকতে বলা হয়েছে। কাউকে যাতে ঢুকতে না দেয়া হয়, সেজন্য তারা এখানে বসে আছেন। পওে সোয়া এগারটার দিকে তারা ওই স্থান ত্যাগ করেন।
গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘সকালে সাড়ে নয়টায় যখন অফিসে ঢুকতে আসি তখন কয়েকজন আমাদের বাধা দেয়। তারা নিজেদের যুবলীগের বলে পরিচয় দেয়। তারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মিছিল করছে। এ সময় তারা বলে আপনারা ঢুকতে পারবেন না। অর্ডার আছে’।
১২ই ফেব্রুয়ারি দখলের দিনের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সেদিন যারা এসেছিলো তারা সেদিন আমাদের অফিসগুলোতে তালা দিয়ে দেয়। পরে বেলা সাড়ে বারোটায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস টেলিকম ভবনে আসেন। এখানে তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনে গত কয়েকদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ দেন।
ড. ইউনূস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সারাদিন ধরে ডেমোনেস্ট্রেশন হচ্ছে, ঝাড়– নিয়ে মিছিল হচ্ছে, কেন হচ্ছে তাওতো বুঝতে পারছি না। আমরা হঠাৎ করে কেন ঝাড়–র যোগ্য হয়ে গেলাম এটা বুঝতে পারছি না’।