বুধবার   ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আশ্বিন ৮ ১৪৩২   ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচন ভন্ডুলের চক্রান্ত চলছে

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৭:১৯ এএম, ৬ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার


ঢাকা অফিস
নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরআগে নারায়ণগঞ্জে শেষ জনসভায় নির্বাচন ভন্ডুলের চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি দেশের সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে এমন কোনো উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় না দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোনো উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন জোগাবেন না। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে আবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে এই ভাষণ দেন। সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য তার দলের লক্ষ্য তুলে ধরেন এবং অতীতের ভুল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার এবং পুনরায় নির্বাচিত হলে সেই ভুলগুলো শোধরানোর একটি সুযোগ হবে বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রেকর্ডকৃত ২৪ মিনিটের এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার, বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং এফএম রেডিওগুলো একযোগে প্রচার করে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দীর্ঘ চলার পথে যতটুকু অর্জন, তার সবটুকুই আপনাদের অবদান। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ অর্জন করা সম্ভব হতো না। চলার পথে যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি করে থাকি, তাহলে ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন-এটাই আমার আবেদন। আবার সরকার গঠন করতে পারলে, ভুলগুলো শোধরানোর সুযোগ পাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার তিন মেয়াদের সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে। ইতোমধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। অর্থনীতির যে কোনো সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০০৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়ে উৎকর্ষতা সাধন হয়েছে। ২০০৯ সালে জিডিপির পরিমাণ ছিল মাত্র ১০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে ৪৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে সুযোগ পাওয়া যাবে তা কার্যকর করা এবং যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে; তা একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মোকাবিলা করতে পারবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। ঘোষিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়নের উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ সমাজ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল কারিগর। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করছে। আমাদের সরকার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করে। জনগণের খাদ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যাপক হারে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন যেন না হয় সেই চক্রান্ত করছে বিএনপি। নিজেরা যেহেতু জিততে পারবে না সেজন্য জ্বালাও-পোড়াও করছে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে। নির্বাচনে আসতে ভয় পায় বলেই তারা সন্ত্রাস করে। বিএনপি সৃষ্টি করতে জানে না। ধ্বংস করতে জানে। তাই দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি বা অগ্রগতিতে আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প নেই তাই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে।