সাই-ফাই লেখকদের ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা!
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৫৯ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

কল্পবিজ্ঞান শুধু লেখকদের কল্পনার রাজ্যেই পড়ে থাকেনি। বইয়ের পাতা থেকে উঠে এসে প্রযুক্তিবিদদের হাতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। কল্পনার জগত থেকে বাস্তব হয়ে ওঠা সেরকম দশ প্রযুক্তির কথা থাকছে এখানে..
১. ডেবিট কার্ড
লেখক: এডওয়ার্ড বেলামি
উপন্যাস: লুকিং ব্যাকওয়ার্ড। সাল : ১৮৮৮
এই উপন্যাসে বেলামি ইউনিভার্সাল ক্রেডিট নামে এক ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন। এটা দিয়ে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে নিজের একাউন্টের টাকা ব্যবহার করা যেত। বাস্তবে ১৯৫০ সালের আগ পর্যন্ত কেউ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেনি।
২. ট্যাঙ্ক
লেখক: এইচ. জি. ওয়েলস
গল্প: দ্য ল্যান্ড আয়রনক্ল্যাডস। সাল : ১৯০৩
স্ট্রেনড ম্যাগাজিনে ছাপা এ গল্পে ওয়েলস যে যুদ্ধযানের ধারণা দিয়েছিলেন তা ছিল ১০০ ফুট লম্বা। আট জোড়া চাকার উপর চলত। বিশ্ববাসী প্রথম ট্যাংক এর ব্যবহার দেখে ১৯১৬ সালে।
৩. ইয়ারবাড
লেখক: রে ব্র্যাডবারি
উপন্যাস:ফারেনহাইট ৪৫১। সাল : ১৯৫৩
১৯৫০ সালে বহনযোগ্য অডিও ডিভাইস ছিল প্রচুর। কিন্তু ব্র্যাডবারি এই উপন্যাসে এমন এক রেডিওর কথা বলেছিলেন, যা দেখতে ছোট ঝিনুকের মতো। এ যন্ত্র কানে শব্দ, গান আর কথার ইলেকট্রনিক সাগর বইয়ে দিত। বাস্তবে ২০০০ সালে ইয়ারবাড বেশি জনপ্রিয়তা পায়।
৪. ভিডিও চ্যাট
লেখক: হুগো গার্নসব্যাক
উপন্যাস : রালফ ১২৪সি ৪১+। সাল : ১৯১১
'মডার্ন ইলেকট্রিকস' ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সেই উপন্যাসে গার্নসব্যাক 'টেলিফোট' নামের যন্ত্রের বর্ণনা দেন। এ যন্ত্র দিয়ে মানুষ বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে কথা বলতে পারতো। বাস্তবে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এটিঅ্যান্ডটি কর্পোরেশন ভিডিও কনফারেন্সিং প্রযুক্তি প্রদর্শন করে। বর্তমানে ভিডিও চ্যাটের জন্য স্কাইপে জনপ্রিয় এক অ্যাপ্লিকেশন।
৫. চাঁদে মানুষ
লেখক: জুল ভার্ন
উপন্যাস: ফ্রম দি আর্থ টু দ্য মুন।সাল : ১৮৬৫
চাঁদে মানুষের পা পড়ার প্রায় ১০০ বছর আগেই জুল ভার্ন চন্দ্রজয়ের গল্প বলেছিলেন।শুধু তাই নয় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে একটি রকেট পাঠাতে ঠিক কি পরিমাণ বল প্রয়োগ করতে হবে তার একটা হিসাব তিনি করেছিলেন সেই সময়ে।
৬.পারমাণবিক অস্ত্র
লেখক : রবার্ট হেইনলিন
গল্প: সলিউশন আনস্যাটিসফ্যাক্টরি।সাল : ১৯৪১
হেইনলিন তার গল্পে বলেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের তেজস্ক্রিয় ধুলো আবিষ্কার করে। এটি জার্মানির বার্লিনে ব্যবহারের মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ হয়।গল্পটা লেখা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়ার আগেই।এমনকি হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার পাঁচ বছর আগে!
৭. কৃত্রিম অঙ্গ
লেখক : মার্টিন সেইডিন
উপন্যাস: সাইবর্গ। সাল: ১৯৭২
এই উপন্যাসে লেখক এমন একজন লোকের কথা বলেছিলেন যে কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে দ্রুতগতিতে চলতে পারত। কৃত্রিম হাতে ছিল অবিশ্বাস্য শক্তি।চোখে ক্যামেরা বসানো ছিল। সম্প্রতি কৃত্রিম অঙ্গের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য কৃত্রিম চোখও তৈরি হচ্ছে।
৮. গণ-নজরদারী
লেখক: জর্জ অরওয়েল
উপন্যাস: নাইন্টিন এইটি ফোর।সাল : ১৯৪৯
এই উপন্যাসে অরওয়েল এমন এক ক্ষমতাশালী সরকারের কথা লিখেছিলেন যারা নাগরিকদের ওপর বিভিন্ন উপায়ে নজরদারি চালাতো। ফরুয়েল যে বাসায় বসে এই উপন্যাসটি লিখেছিলেন সে বাসার ২০০ গজের মধ্যে ৩২টি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল!
৯. কৃত্রিম উপগ্রহ
লেখক: আর্থার সি ক্লার্ক।
প্রস্তাবনা: দ্য স্পেস স্টেশনস: ইটস রেডিও অ্যাপ্লিকেশনস। সাল : ১৯৪৫
ক্লার্ক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন। বিশেষ করে টেলিভিশন সিগন্যালের কথা। কৃত্রিম উপগ্রহের বাণিজ্যিক ব্যবহারের আগেই তিনি এ প্রস্তাবনা প্রকাশ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে ওয়্যারলেস ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনে এটি প্রকাশিত হয়।
১০. বৈদ্যুতিক গাড়ি ও অন্যান্য
লেখক: জন ব্রানার
উপন্যাস: স্ট্যান্ড অন জাঞ্জিবার।সাল: ১৯৬৯
উপন্যাসে ব্রানার বলেছিলেন, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন অবমি (২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা)। তখন সে দেশে অনেক হামলা হবে, সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করবে স্কুলে,গোলাগুলি হবে। রিচার্জেবল ইলেকট্রিক ফুয়েল সেল চালিত গাড়ি, নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক মিউজিক, সুপার কম্পিউটার, আধুনিক জিন তত্ত্ব-এই উপন্যাসে করা ভবিষ্যৎবাণীর মধ্যে অন্যতম।