আ. লীগে স্বস্তি, দ্বিধায় বিএনপি
সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:০৬ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৩ শনিবার

নির্বাচনে ভোট ৭ জানুয়ারি
ঢাকা অফিস
বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। গত বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসির ভাষণ সম্প্রচার শুরু হয়।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।
নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা এখনো হয়নি। বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীন নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। সংঘাতময় এ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেন সিইসি।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ দফা (৩) উপদফা (ক)-এর বরাতে এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেন সিইসি। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার আগে বিকেল পাঁচটায় নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনাররা। সেখানে নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত করা হয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি। এর আগের ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। ২ নভেম্বর সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর হিজড়া ভোটারের সংখ্যা ৮৫২।
এদিকে, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অনেকটা স্বস্তির বাতাস বইছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে এবং দলটি আজ (শুক্রবার) থেকেই তাদের দলীয় প্রার্থী হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
উল্টো দিকে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে নানামুখী প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ মনে করছেন তফসিল ঘোষণা হলেও বৈশ্বিক চাপে সরকারকে নির্বাচনের আগেই একটি সমঝোতায় আসতে হবে। বিএনপি এবং দলটির সাথে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্যান্য দলগুলো এ তফসিলকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আবার কারও ধারণা তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় এখন সরকারি দল আওয়ামী লীগ যেভাবে চাইছে সেভাবেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে এবং বিএনপি ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে গেলেও সেটি নির্বাচন কমিশনকে বিএনপি ছাড়াই নির্বাচন করা থেকে বিরত রাখতে পারবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে।
আবার তফসিল হলেই সবাই একযোগে মাঠে নেমে পড়বে বলে যে প্রচারণা চলছিলো বিএনপির ভেতরে গত কিছুদিন ধরে, তেমন কিছুও দেখা যায়নি রাজনীতির মাঠে। এমন পরিস্থিতিতে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে যেন কোন হতাশা না তৈরি হয় সেজন্য কর্মসূচির মাত্রা বাড়ানোর পন্থা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে।
তবে দলটির মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘হতাশার কোন সুযোগই নেই, কারণ সরকার এ নির্বাচন করতে পারবে না। আরও একবার একতরফা নির্বাচনের সুযোগ এ সরকার পাবে না।’