সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১   ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সাড়ে ৩ বছরেও শুরু হয়নি জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন উৎপাদন

নিউজ ডেস্ক

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১২:৪২ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২৩ বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশে সরকারিভাবে স্যালাইন উৎপাদন হতো মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (আইপিএইচ)। প্রতিদিন গড়ে আট হাজার ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করা হতো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্তপূরণ করতে না পারায় ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের স্যালাইন উৎপাদন জরুরি ছিল। প্রতিষ্ঠানটি যদি চালু থাকতো তাহলে দেশের এই সংকটকালে স্যালাইনের ঘাটতি দেখা দিতো না। ডেঙ্গু রোগীদের চাহিদা পূরণ হতো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্তপূরণ করতে না পারায় স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তবে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ফের প্রতিষ্ঠানটি চালু করা যেতো।

জানা গেছে, ডেঙ্গু চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় বিষয় রোগীর শরীরের ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট করা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ায় সংকটাপূর্ণ দেখলেই রোগীদের ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর এই ভর্তির পর থেকে রোগীদের নিয়মিত স্যালাইন দেওয়া হয়ে থাকে। ডেঙ্গু রোগের এটাই চিকিৎসা।

এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপে জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। গেলো তিনমাসে ডেঙ্গুতে প্রতিদিন গড়ে ১০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হয়েছে ২৫০০ এর বেশি। বর্তমানে ঢাকা ও ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে ভর্তি রয়েছেন ৯২৮৪ জন রোগী।

তবে ডেঙ্গু রোগীদের পড়তে হয়েছে স্যালাইন সংকটে। দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বাইরে মিলছে না আইভি ফ্লুয়িড। রাজধানীর শাহবাগ ও বাড্ডা এলাকার ফার্মেসিগুলোতে দেখা যায় এই চিত্র। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন এই আইভি ফ্লুয়িড।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমাদের বর্তমান যে চাহিদা তাতে ৩০ থেকে ৪০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন প্রয়োজন হয়। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। তবুও আমরা নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে স্যালাইন আমদানি করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মো. নাসির উদ্দিন জানান, ২০২০ সালের ১৫ জুন থেকে বন্ধ হয়েছে এই ইনস্টিটিউটের স্যালাইন উৎপাদন। উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বছরে ১৪ লাখ স্যালাইন ব্যাগ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল। যদিও স্যালাইন তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ২০ লাখ ব্যাগ। সম্পূর্ণ চাহিদা মেটাতে না পারলেও বড় একটি সাপোর্ট দিতে পারতো এই প্রতিষ্ঠানটি। এতে করে কম টাকায় দেশের গরিব মানুষরা স্যালাইন পেতো।

তিনি জানান, সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানটি ফের চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদারসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দেখে গেছেন। আমরা নতুন করে লে আউট তৈরি করেছি। লাইসেন্সের ২৮টি শর্ত মেনে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ঠিক রেখে ফের উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। বাজেট প্রাপ্তিতে আমরা চার থেকে ছয় মাসের মধ্যেই ফের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রাথমিক কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য মেশিনারিজ এবং উৎপাদন চালু করতে কত টাকা প্রয়োজন হতে পারে তা হিসাব করে বাকি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।