মঙ্গলবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩২   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতিসংঘ হাইকমিশনারের উদ্বেগ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:৫৬ এএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বুধবার

 বাংলাদেশে মানবাধিকার ও সুশীল সমাজের নেতাদের বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। গতকাল এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এ বার্তা প্রচার করেছেন বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে। এতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর দুই নেতা আদিলুর রহমান খান ও নাসিরউদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকারের পক্ষে কাজ করা এবং সুশীল সমাজের নেতাদের আইনি প্রক্রিয়ায় যেভাবে অব্যাহতভাবে হুমকি প্রদর্শন ও হয়রানি করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি মানবাধিকারকর্মী এবং অন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানান। তারা যাতে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করে যেতে পারেন তার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরির কথা বলা হয় বিবৃতিতে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার আরও বলেন, প্রফেসর ইউনূস প্রায় এক দশক ধরে হয়রানি ও হুমকির মধ্যে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে দুটি আলাদা বিচার চলছে, যাতে তার কারাদণ্ড হতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে দুর্নীতির অভিযোগে। যদিও প্রফেসর ইউনূস আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পাবেন। কিন্তু আমরা উদ্বিগ্ন যে, প্রায়শই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তাতে তার আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি ন্যায্য বিচারের অধিকার ঝুঁকিতে রয়েছে।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের নেতা আদিলুর রহমান খান ও নাসিরউদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলোও আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ৭ সেপ্টেম্বর এসব মামলার রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ১০ বছর আগে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং’ প্রতিবেদনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। তারা উভয়ই হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের প্রতিষ্ঠান অধিকারের লাইসেন্সও নবায়ন করা হচ্ছে না।
সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, মানবাধিকারকর্মী এবং অন্য ভিন্নমত পোষণকারীদের আইনি হয়রানি বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক লক্ষণ। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা এ মামলাগুলো। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশের বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ন্যায্য বিচারের অধিকারের কঠোর এবং ধারাবাহিক প্রয়োগ নিশ্চিতে এ মামলাগুলোকে যথাযথভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।