মঙ্গলবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩২   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

সাগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভারত মিয়ানমারের জেলেরা

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:১৫ এএম, ৩১ জুলাই ২০২৩ সোমবার

 সাগরে বাংলাদেশিদের জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সাগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভারত ও মিয়ানমার জেলেরা। কর্মহীন দেশের মৎস্যজীবীরা। তাই সামুদ্রিক মাছের প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজে আসছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় দিশেহারা জেলেরা। কর্মহীন জেলে পরিবারগুলোতে চলছে হাহাকার। সমুদ্রে মাছ শিকারের ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তাই ঘাটে বসে আছেন জেলেরা। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করছেন পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা। জেলেদের অভিযোগ, প্রতিবারই বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞার সুযোগে সমুদ্র দাপিয়ে বেড়ায় ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন বাংলাদেশি জেলেরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করলেও সমুদ্র থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছেন অন্যরা। তাই শুরু থেকেই এ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে আসছেন জেলে ও মৎস্যজীবীরা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, একই সাগরে দুই নিয়ম চলতে পারে না। পার্শ্ববর্তী অন্য দেশের জেলেরা মাছ ধরায়, বঙ্গোপসাগর জালমুক্ত থাকছে না। তাই এই নিষেধাজ্ঞার উপকারিতা দেখছেন না তারা। পবিপ্রবির মৎস্য জীববিজ্ঞান এবং জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আরিফুল আলম বলেন, সামুদ্রিক মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য সমুদ্র জালমুক্ত রাখতে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণের পরামর্শ দিয়ে আসছি আমরা। এ ছাড়াও সামুদ্রিক মাছের প্রজননের সঠিক সময় চিহ্নিত করতে নতুন করে গবেষণা করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

কোড়ালিয়া জেলে পল্লীর সভাপতি জহির হাওলাদার বলেন, সরকার অবরোধ দিয়েছে আমরা সাগর থেকে তীরে চলে এসে ঘাটে নোঙ্গর করে আছি। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা তো মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে তা তো কেউ ঠেকাতে পারছে না। তাহলে এ অবরোধ দিয়ে কি লাভ হলো। বরং নিজেদের দেশের ক্ষতি হচ্ছে। কত জেলে না খেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। জেলে মোকফার বলেন, বার বার অবরোধের কারণে অনেক মৎস্য ব্যাবসায়ী ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় চলে যাচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন অন্য দেশের জেলেরা। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি অমরা। এভাবে চলতে থাকলে একসময় কোনো জেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৪৭ দিন ঘাটে নোঙর করে থাকতে হয় উপকূলের জেলেদের। এ সময় বেকার কাটাতে হয় তাদের। যার কারণে ঋণের বোঝা পিছু ছাড়ছে না জেলেদের। মা ইলিশ ধরায় ২২দিন, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণে ৮ মাস, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভায়শ্রমে এবং সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞাসহ বছরে ১৪৭ দিন সাগর ও নদীতে নিষেধাজ্ঞা থাকে।